‘অধিকারী–গড়’ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। একইসঙ্গে কাঁথি পুরসভার নিয়ন্ত্রণ হারালেন শিশির অধিকারী এবং তাঁর পরিবার। হাতছাড়া হল কাঁথি পুরসভা। যা চার দশক ধরে অধিকারীদের দখলে ছিল। এবার কাঁথিতে বোর্ড গঠন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। যার সম্ভাব্য পুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরির ছেলে।
কী ফলাফল দাঁড়াল সেখানে? কাঁথি পুরসভায় মোট আসন ২১টি। যার মধ্যে ১৭টিই জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তিনটি জিতেছে বিজেপি। আর একটি গিয়েছে নির্দলের হাতে। কাঁথি উত্তরের বিজেপি বিধায়ক সুমিতা সিংকে এই পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছিল। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে হেরেছেন ৭৭ ভোটে। এই ফলাফলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দলের অন্দরে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। এই ফলাফল এখন অধিকারী পরিবারকে ভাবিয়ে তুলেছে বলে সূত্রের খবর।
জানা গিয়েছে, ষাটের দশকের শেষে শিশির অধিকারীর হাত ধরে কাঁথি পুরসভা অধিকারী পরিবারের দখলে আসে। সেই শুরু। তারপর থেকে আর হাতছাড়া হয়নি। এই প্রথম সেই মিথ কার্যত মুথে সাফ হয়ে গেল। এই পরাজয় কার্যত শুভেন্দুর পরায় হিসাবেই এখন দেখা হচ্ছে। নিজের ‘খাসতালুক’–এ নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন। কিন্তু কোনও কিছুই কাজে লাগেনি।
শুভেন্দুর ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারী আগে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তখন তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। একুশের নির্বাচনে দাদার হাত ধরে বিজেপিতে যোগ। তারপর হাতছাড়া হল কাঁথি পুরসভা। ১৯৬৯ সাল থেকেই কাঁথি পুরসভা অধিকারী পরিবারের দখলে। ১৯৬৯ সালে কমিশনার হিসাবে কাঁথি পুরসভায় প্রথম পা রাখেন শিশির অধিকারী। তখন থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন শিশিরবাবু। ১৯৮৬–২০০৯ পর্যন্ত সময় ফের পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ২০১০–২০২০ পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন সৌম্যেন্দু।