একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম–কংগ্রেস শূন্য পেয়েছিল। তারপর কংগ্রেস বহু চেষ্টা করে একজনকে বিধানসভায় ঢোকাতে পারলেও সেটা টিকিয়ে রাখতে পারেনি। তবে তারপর থেকে যত নির্বাচন হয়েছে তাতে অভিযোগ উঠেছে ‘বামের ভোট রামে’ গিয়েছে। তাই বামেদের ক্ষতি হলেও ফুলেফেঁপে উঠেছে বিজেপি। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই ধারা আটকাতে মরিয়া আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। বেশ কয়েকটি সমবায় নির্বাচনে অবশ্য বাম–রাম হাত মিলিয়েছিল। কিন্তু আর নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রাভঙ্গ করতে চাইছে না তাঁরা। তাই এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে নয়া নির্দেশ জেলাগুলিতে পাঠাল সিপিএম।
নতুন নির্দেশ ঠিক কী? সাধারণত বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে ইভিএম থাকে। সেখানে কোনও দলের প্রার্থী পছন্দ না হলে বিশেষ বোতাম ‘নোটা’ থাকে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় ব্যালট পেপারে। সেখানে নোটা বোতামের ব্যবস্থা নেই। এই আবহে সিপিএমের রাজ্য দফতর থেকে প্রত্যেকটি জেলায় নির্দেশ গেল যে, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস বা আইএসএফ কিংবা তাদের সমর্থিত নির্দল প্রার্থী যদি কোথাও না থাকে তাহলে ফাঁকা ব্যালট জমা দিতে হবে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই তৃণমূল–বিজেপি কাউকে ভোট দেওয়া যাবে না। এই নয়া কৌশলেই ভোটব্যাঙ্ক নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিল বামফ্রন্টের বড় শরিক দল।
আজ রাত পোহালেই গ্রামবাংলা জুড়ে শুরু হয়ে যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই প্রচার–পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। গ্রামের মাটিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে গ্রামের মাটি হিংসায় রক্তাক্ত হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক–মুহূর্তে সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সুতরাং এখন সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্য–রাজনীতি। এই পরিস্থিতিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৩,২২৯টি আসনে শনিবার নির্বাচন হবে। সেখানে সিপিএম প্রার্থী রয়েছে ৩৫,৪১১ আসনে। ১১,৭৭৪ আসনে লড়ছে কংগ্রেস। ফরওয়ার্ড ব্লক ১,০৫১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আইএসএফ এবং বাম–কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল। যদিও তারপরে বেশ কয়েক হাজার গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে তাদের কোনও প্রার্থী নেই।
আরও পড়ুন: আজ মুর্শিদাবাদ সফরে রাজ্যপাল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের একদিন আগেই হঠাৎ ছুটলেন
ভোট ট্রান্সফারের ভয় পাচ্ছে সিপিএম? গ্রামীণ এই নির্বাচনে লালপার্টি টেক্কা দিতে চাইছে বিজেপিকে। কারণ তৃণমূল শাসকদল এবং সংগঠন মজবুত হওয়ায় তাদের জোরদার টক্কর দেওয়া সম্ভব নয়। ভোট কাটাও যাবে না। সেখানে বিজেপিকে ঠেকাতে পারলে ভোটব্যাঙ্ক বাড়বে এবং জেতা পর্যন্ত যাবে। এই বিষয়ে সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য নিরঞ্জন সিহি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বাম–কংগ্রেস বা সমর্থিত প্রার্থী যেখানে নেই, সেখানে ফাঁকা ব্যালট জমা পড়বে। বিজেপি–তৃণমূলের থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখতেই এই নির্দেশ।’