আজ রাত পোহালেই গ্রামবাংলা জুড়ে শুরু হয়ে যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই প্রচার–পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। গ্রামের মাটিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অস্তিত্ব দেখা যাচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে গ্রামের মাটি হিংসায় রক্তাক্ত হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক–মুহূর্তে সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সুতরাং এখন সরগরম হয়ে রয়েছে রাজ্য–রাজনীতি। এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার মুর্শিদাবাদে হঠাৎ ছুটলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে রাজ্যপালের এই সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন নির্বাচনের একদিন আগে মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন? আগে কেন গেলেন না? তবে গত কয়েকদিন আগেই তাঁর মুর্শিদাবাদ যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় তিনি যেতে পারেননি বলে রাজভবন সূত্রে খবর। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগের দিন মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন রাজ্যপাল। আজ,শুক্রবার হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস করে মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন রাজ্যপাল। সেখানে নেমে প্রথমে তিনি হাজারদুয়ারি দেখবেন বলেই খবর।
আর কোথায় যাবেন রাজ্যপাল? অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের ডোমকল–সহ সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় যেতে পারেন রাজ্যপাল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সবথেকে বেশি স্পর্শকাতর জেলা মুর্শিদাবাদ। তাই এখানের প্রস্তুতি কেমন সেটা তিনি সরেজমিনে দেখে নিতে চাইছেন। মুর্শিদাবাদের নানা প্রান্ত থেকে হিংসার খবর সামনে এসেছে। আর খুন পর্যন্ত এখানে হয়েছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে মুশিদাবাদ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে রাজভবন সূত্রে খবর। তবে রাতেই আবার ট্রেনে ফিরে আসবেন রাজ্যপাল। সুতরাং রাজ্যপালের এই ঝটিকা সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ‘দিদি জিন্দাবাদ’, এসএসকেএম হাসপাতালে পা রেখে শিশুকণ্ঠে শুনলেন মুখ্যমন্ত্রী
আর কী জানা যাচ্ছে? আগে ভাঙড়, ক্যানিং, দিনহাটা গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেটার রেশ ধরেই আজ, শুক্রবার মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন রাজ্যপাল। কিন্তু তিনি সমালোচনার উর্দ্ধে উঠতে পারলেন না। কারণ রাজ্যপালের মুর্শিদাবাদ সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে নালিশ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের পাঠানো চিঠিতে স্পষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে যে, রাজ্যপাল যেভাবে মুর্শিদাবাদ যাচ্ছেন তাতে তিনি আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন। যদিও তাঁর সূচি এখনও চূড়ান্ত নয়। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি এবং ১৪৪ বলে দুটি বিষয় আছে। সেখানে রাজ্যপাল একটি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তিনি যদি সংবিধান বহির্ভূতভাবে আদর্শ আচরণবিধি ভেঙে নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এমন কাজ করেন তাহলে আমরা তো আপত্তি করবই। এখন রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা দেখার জন্য প্রশাসন আছে। আর সেটা রয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কন্ট্রোলে। সেখানে রাজ্যপাল একটা সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন।’