গ্রামবাংলা কার? এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি করতে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনা। এই আবহে গণনার দিন উঠে এল এক নতুন বিষয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের এলাকায় জিতল তৃণমূল কংগ্রেস। ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা গ্রামে বাড়ি দিলীপ ঘোষের। গোপীবল্লভপুরের কুলিয়ানা ২৫ নম্বর বুথে দিলীপের এলাকায় বিজেপি প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই বুথে নির্দলকে পরাজিত করে ২৪ ভোট জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের শিবানী দেউলি। আজ, মঙ্গলবার নানা গণনাকেন্দ্রে শুরু হয় ভোটগণনা। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। রাজ্যের ২২টি জেলার গ্রামীণ মানুষজনের মতামত ব্যালট বাক্সে বন্দি। সেগুলি রয়েছে ৭৬৭টি স্ট্রংরুমে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মোট ৩৩৯টি ভোট গণনাকেন্দ্রে সেই ব্যালট বাক্স খুলে গোনা শুরু হয়েছে।
এদিকে গোপীবল্লভপুর দুই ব্লকের কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৩। তার মধ্যে কুলিয়ানা সংসদে রয়েছে দু’টি বুথ। সেখানে কুলিয়ানার বুথ নম্বর ২৫–এ শুধু প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। বাকি বুথগুলিতে বিজেপির প্রার্থী দিয়েছে। আর সেখানে ছিল নির্দল প্রার্থী। তিনিও জিততে পারেননি। আবার ২৪ নম্বর বুথেও জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখানের প্রার্থী সুকোমল মহাপাত্র জয়ী হয়েছেন। এখনই দেখা যাচ্ছে জেলায় জেলায় ঘাসফুল ঝড় উঠেছে। বাংলার ভোট গণনা কেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ধারেকাছে কোনও জমায়েত করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক কেন্দ্রে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। ৩৩৯টি কেন্দ্রে গণনার প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত, তার পর পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব শেষে জেলা পরিষদের আসনে গণনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল বিজেপির দখলে। ১৩টি আসনের মধ্যে ১০টিতেই জিতেছিল বিজেপি। তার আগে ২০১৩ সালে এই গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। এবার আবার তা তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে এল। আজ গণনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে ভোট গণনাকেন্দ্রে। এমনকী গণনাকেন্দ্রে থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। এক কোম্পানি আধাসেনা জওয়ানদের নিয়ে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলির পাহারায় মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘মা–মাটি–মানুষের জয় হবে’, ভোট গণনা শেষের আগেই ভবিষ্যদ্বানী করলেন পার্থ
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ? আজ, মঙ্গলবার এই হারের খবর তাঁর কাছ পৌঁছয়। তখন মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা তো লড়াইয়ে ছিলাম না। আমরা প্রার্থী দিতে পারিনি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল ছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের মোকাবিলা যেখানে বড় রাজনৈতিক দলগুলি করতে পারছে না, সেখানে নির্দল কী করবে?’ উত্তর থেকে দক্ষিণ জোড়াফুল ঝড়ে বিরোধীরা বেসামাল। ৩৩৯টি ভোটগণনা কেন্দ্রে স্ট্রংরুমের সংখ্যা ৭৬৭। গণনাকক্ষের সংখ্যা ৩,৫৯৪। গ্রাম পঞ্চায়েতের ফল ঘোষণা করবেন কাউন্টিং অফিসার। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ফল ঘোষণা করবেন বিডিও। প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে একজন করে অফিসার আছেন।