গ্রামবাংলা কার? এই প্রশ্নের নিষ্পত্তি করতে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনা। এই আবহে গণনার দিন উঠে এল এক নতুন দাবি। একুশের বিধানসভা নির্বাচন কিংবা অন্যান্য নির্বাচনে তিনিই ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব। কারণ তিনি একেবারে দলের সামনে থেকে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিতেন। এখন এই নেতা জেলে। আজ তাঁকে শুনানির জন্য আদালতে নিয়ে আসা হয়। হ্যাঁ, তিনি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দল তাঁকে বহিষ্কার করেছে। আজ, মঙ্গলবার সকালে নানা গণনাকেন্দ্রে শুরু হয় ভোটগণনা। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গণনা। রাজ্যের ২২টি জেলার গ্রামীণ মানুষজনের মতামত ব্যালট বাক্সে বন্দি। সেগুলি রয়েছে ৭৬৭টি স্ট্রংরুমে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মোট ৩৩৯টি ভোট গণনাকেন্দ্রে সেই ব্যালট বাক্স খোলা শুরু হয়েছে। এবার তা নিয়েই ভবিষ্যদ্বানী করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এদিকে আজ পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে কী হবে? জিজ্ঞাসা করা হয়ে পার্থবাবুকে। আজ, মঙ্গলবার জেল হেফাজত শেষে আদালতে পেশ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এদিন আলিপুরের বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। সেখানে প্রবেশের আগে তিনি জানিয়ে দেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই ভরসা রাখবে গ্রামবাংলা। তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এখনই দেখা যাচ্ছে জেলায় জেলায় ঘাসফুল ঝড় উঠেছে। বাংলার ভোট গণনা কেন্দ্রগুলিতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গণনাকেন্দ্রের ধারেকাছে কোনও জমায়েত করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক কেন্দ্রে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। ৩৩৯টি কেন্দ্রে গণনার প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত, তার পর পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব শেষে জেলা পরিষদের আসনে গণনা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আগেও তিনি তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই বারবার সওয়াল করেছেন। এবার তাই করলেন। যদিও দল এবং মন্ত্রিসভা থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ইডি– সিবিআই তাঁকে জেরবার করে রেখেছে। তার মধ্যে প্রেসিডেন্সি জেলের কুঠুরিতে তাঁর কেউ খোঁজ নেয় না। তারপর দলের প্রতি আনুগত্য রয়েছে তাঁর। আজ গণনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে ভোট গণনাকেন্দ্রে। এমনকী গণনাকেন্দ্রে থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। এক কোম্পানি আধাসেনা জওয়ানদের নিয়ে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। স্পর্শকাতর এলাকাগুলির পাহারায় মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ।
আরও পড়ুন: বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার ভয়ে অসমে পাড়ি মানুষজন, টুইট করলেন হিমন্ত
ঠিক কী বলেছেন পার্থ? আজ, মঙ্গলবার জেল হেফাজত শেষে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। আলিপুর আদালতে ঢোকারে আগে সাংবাদিকরা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেমন ফল হবে? জবারে দলের মঙ্গল কামনা করে পার্থ বলেন, ‘মা–মাটি–মানুষের জয় হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় হবে।’ তারপরই দেখা যায় উত্তর থেকে দক্ষিণ জোড়াফুল ঝড়ে বিরোধীরা বেসামাল। ৩৩৯টি ভোটগণনা কেন্দ্রে স্ট্রংরুমের সংখ্যা ৭৬৭। গণনাকক্ষের সংখ্যা ৩,৫৯৪। গ্রাম পঞ্চায়েতের ফল ঘোষণা করবেন কাউন্টিং অফিসার। পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ফল ঘোষণা করবেন বিডিও। প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে একজন করে অফিসার আছেন।