কর্ণাটকে বিজেপিকে হারাতে কোমর কষে ময়দানে নেমেছিলেন রাহুল গান্ধী। গতবছর যখন গুজরাট নির্বাচনের উত্তাপ লেগেছিল জাতীয় রাজনৈতির মহলে, তখন রাহুল ছিলেন কর্ণাটকে। সেই রাজ্যে ২১ দিন ধরে ভারত জোড়ো যাত্রায় হাঁটেন রাহুল গান্ধী। এবছরও কর্ণাটকের উত্তর থেকে দক্ষিণ চষে বেরান রাহুল। করেন একাধিক জনসভা। মানুষের মাঝে মিশে যান। ওঠেন বাসে, চাপেন বাইকের পিছনে। প্রচারের সময় বারবার তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে 'ভালোবাসার বার্তা'। এই আবহে আজকে কংগ্রেস জিততেই ফের রাহুলের গলায় শোনা গেল সেই 'ভালোবাসার বার্তা।' প্রাক্তন সাংসদ আজ বলেন, 'কর্ণাটকে হিংসার বাজার বন্ধ হয়েছে, ভালোবাসার দোকান খুলেছে'। পাশাপাশি এই ফলাফলের জন্য তিনি কর্ণাটকবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে কর্ণাটক বারবার সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়েছে। হিজাব ইস্যু থেকে শুরু করে বজরং দলকে নিষিদ্ধ করার কংগ্রেসি প্রতিশ্রুতি, রাজ্যে বারবার তৈরি হয়েছে উত্তেজনাপূর্ণ আবহাওয়া। এ আবহে 'হিংসা'র ইস্যুতে বিজেপিকে বারবার খোঁচা দিয়ে এসেছে কংগ্রেস। আর আজ রাজ্যের ক্ষমতা দখল নিশ্চিত করে ফের বিজেপিকে সেই খোঁচাই দিলেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘আমি সবার আগে কর্ণাটকের বাসিন্দা, কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ জানাতে চাই। এই নির্বাচনে একদিকে ছিল পুঁজিবাদীরা। অপরদিকে ছিলেন গরিব মানুষরা। অন্যান্য রাজ্যেও এই হবে। আমরা গরিবদের পাশে ছিলাম। আমার ভালো লেগেছে যে আমরা কোনও হিংসা বা বাজে কথা বলে লড়িনি। ভালোবাসা দিয়ে লড়েছিলাম।’
এদিকে এদিন সিদ্দারামাইয়া থেকে শুরু করে ডিকে শিবকুমার, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের গলায় রাহুলের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল। সিদ্দারামাইয়া আজ বলেন, 'আমি আশা করি রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হবেন।' এদিকে মল্লিকার্জুন খাড়গে জানিয়ে দেন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন রাহুল। কর্ণাটকে রাহুল মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে প্রচার করেন দলের হয়ে। কখনও বেঙ্গালুরুতে বাসে চড়েছেন, কখনও তিনি বাইকের পিছনে চেপেছেন। মানুষের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেছেন। প্রচুর জনসভা করেছেন। তারও আগে অবশ্য গতবছর তিনি পদযাত্রার মাধ্যমে রাজ্যের একাধিক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা। এদিকে রাহুলের সাংসদপদ খারিজ হওয়ার পর এটাই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন ছিল কোনও রাজ্যে। এই আবহে এই জয়কে রাহুলের প্রতি মানুষের 'সমর্থন' হিসেবেই তুলে ধরতে চাইছে শতাব্দী প্রাচীন দল। এদিকে আজকে নির্বাচনে জিতে রাহুল বলেন, ‘কর্ণাটকে হিংসার বাজার বন্ধ হয়েছে, ভালোবাসার দোকান খুলেছে।’