'উত্তর-দক্ষিণ' মন্তব্যের জেরে বিজেপির কড়া আক্রমণের মুখে পড়লেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের তরফে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা হলেও কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মার মতো নেতারা সেই মন্তব্য ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব রাহুলের দিকেই ঠেলে দিয়েছেন। বরং রাহুলের ব্যাট ধরেছেন কংগ্রেস মুখ্য মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা।
কেরালায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্ 'ঐশ্বর্য যাত্রা'-এর সময় ওয়াইনাডের সাংসদ বলেন, 'প্রথম ১৫ বছর আমি উত্তর (ভারত) থেকে সাংসদ ছিলাম। তাই আমি ভিন্ন ধরনের রাজনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম। কেরালায় আসার বিষয়টা আমার কাছে অত্যন্ত প্রাণবন্তকর। আচমকা দেখছি যে মানুষ এখানে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আগ্রহী। ভাসাভাসাভাবে নয়, একেবারে বিস্তারিতভাবে জানেন।'
সেই মন্তব্যের পরই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতিকে আক্রমণ শানাতে থাকে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, 'ভারতীয়দের অপমান করা রাহুল গান্ধীর সেরা অবসরযাপন। ভারতীয়রা পৃষ্ঠপোষক নয়, সেটা আপনি মাননীয় রাহুল গান্ধী।' কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জাভড়েকরের সতীর্থ রবিশংকর প্রসাদ বলেন, 'আপনাদের একটা জাতীয় দল এবং আপনারা দেশের পরিবেশের মধ্যে পার্থক্য করছেন।যা স্বভাবতই (জাতীয় দলের একজন নেতা) হিসেবে আপনার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।'
বিধানসভা ভোটের আগে খোদ রাহুল বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ায় ঘরোয়া মহলে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছেন সিব্বল, আনন্দরা। 'দেশভাগের' অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সংবাদসংস্থা এএনআইকে সিব্বল বলেন, 'রাহুল গান্ধীর মন্তব্য নিয়ে কথা বলার কেউ নয় আমি। উনি বলেছেন এবং উনি ব্যাখ্যা করতে পারবেন যে কোনও পরিস্থিতিতে এরকম মন্তব্য করেছেন। আমি শুধু বলতে পারি যে এই দেশের ভোটাররা বিচক্ষণ এবং তাঁদের সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের অবশ্যই শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ' একইসুরে আনন্দও বলেন, 'রাহুল গান্ধী পর্যবেক্ষণ করেছেন। হয়ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সামনে এনেছেন। কোন প্রসঙ্গে উনি সেই মন্তব্য করেছেন, তা উনি বলতে পারবেন, যাতে কোনও ভুল অনুমান বা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি না হয়। কংগ্রেস কখনও দেশভাগ করেনি।'
তবে রাহুলের হয়ে কিছুটা সওয়ালের চেষ্টা করেছেন সুরজেওয়ালা। গেরুয়া শিবিরকে পালটা আক্রমণ শানিয়ে তিনি দাবি করেন, বিজেপি সরকারের আমলে জিডিপি গোত্তা খেয়ে পড়ছে, ছোটো-মাঝারি ব্যবসা ধসে পড়ছে, সংবিধানের উপর আঘাত নামানো হচ্ছে, মানুষের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। তা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।