কলকাতা হাইকোর্ট কিনে নিয়েছে বিজেপি। বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করে বুধবার পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে দলীয় সভা থেকে এমনই দাবি করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, বাংলায় কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? টিচারের চাকরি তার মানে কি আর হবে না?
আরও পড়ুন: ২০১৬ প্যানেল বাতিলে বাংলার স্কুলগুলিতে কতটা শূন্যতা তৈরি হবে? বিস্ফোরক পরিসংখ্যান পর্ষদের
পড়তে থাকুন: ‘মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি ঘেরাও করুন’, এসএসসি কাণ্ডে সুর চড়ালেন শুভেন্দু
চাকরি দেওয়ায় নাক গলাই না
বুধবার বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে সভা করেন মমতা। সেখানে বিজেপি ও বিচারব্যবস্থাকে একই আসনে বসিয়ে আক্রমণ করেন তিনি। আদালতকে বিজেপির মহাতীর্থ কেন্দ্র বলে উল্লেখ করেন। মমতা বলেন, ‘ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারার গোঁসাই। নিজেরা চাকরি দেয় না, কোন ডিপার্টমেন্ট কী ভাবে চাকরি দেয় সেটা সেই ডিপার্টমেন্টের ব্যাপার। আমি ইন্টারফেয়ার করি না। কিন্তু আমার খারাপ লেগেছে। বারে বারে দেখছি। বলছে ২৬ হাজার টিচারকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। আবার বলছে ১ মাসের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ দিয়ে তাদের সব টাকা ফেরত দিতে হবে। বিজেপি নেতাদের বলি, যারা এই সব কেস করে শিক্ষক – শিক্ষিকার চাকরি খাচ্ছো সারা জীবন সরকারি চাকরি করার পর যদি সেই টাকা ফেরত দিতে বলা হয়, পারবেন দিতে'?
মমতার প্রশ্ন, 'তাহলে এই ২৬ হাজার ছেলে - মেয়ে যাবে কোথায়? বাংলায় কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? টিচারের চাকরি তার মানে কি আর হবে না? আমার হাতে এখনও সরকারি দফতরে ১০ লক্ষ এক্সট্রা চাকরি আছে। এই কোর্ট গেলেই আটকে দিচ্ছে। বিজেপির একটা মহাতীর্থ কেন্দ্র। সেখানে বিজেপি PIL করলেই একেবারে যা বলবে তাই। আর অন্য কেউ যদি বিচার চায় তাদের জন্য দরজা বন্ধ’।
বিজেপির কথায় চাকরি খাচ্ছে
বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আজ বিজেপির কথায় মানুষের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। ডাকাতদের জামিন দিয়ে দিচ্ছে। মাফিয়াদের জামিন দিয়ে দিচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় গদ্দারের নামে মার্ডার কেস থাকা সত্বেও বলছে, তাকে গ্রেফতার করা যাবে না। এটা কি আইন’? যদি কোনও অন্যায় কেউ করে থাকে, তুমি স্কুটিনি করতে। তুমি পরামর্শ দিতে। তা না করে এক কথায় ২৬ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে নিয়ে, এটা কি মজার মুলুক?
আরও পড়ুন: ‘আগে সবাই এই হাসিটা পছন্দ করত, এখন পাগল বলে’! মিম বানানো নিয়ে বক্তব্য রচনার
আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বিরোধীদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান করেন মমতা। বলেন, ‘শিক্ষক – শিক্ষিকাদের বলব, আজকে ২৬ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে কোনও শিক্ষক শিক্ষকা, সরকারি কর্মচারী একটি ভোটও আর বিজেপিকে দেবেন না। সিপিএম কংগ্রেসকে দেবেন না। এরা চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। আপনার ভবিষ্যৎ খেয়ে নিচ্ছে। কে জানে কাল আবার চাকরি খাবে। এরা যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেয় তত মঙ্গল’।
হাইকোর্ট কিনে নিয়েছে বিজেপি
এর পরই সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টকে বিজেপি কিনে নিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এরা কোর্ট কিনে নিয়েছে। সিবিআই কিনে নিয়েছে। আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমরা এখনো বিচারের আশায় আছি। এরা হাইকোর্ট কিনে নিয়েছে। এরা সিবিআই কিনে নিয়েছে। এরা NIA কিনে নিয়েছে। এরা বিএসএফ কিনে নিয়েছে। দূরদর্শন দেখবেন, তার রংটাও গেরুয়া করে দিয়েছে’।