কোচবিহারের সভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করে একের পর এক তির ছুঁড়লেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। সেই সঙ্গেই রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি উত্তরবঙ্গের রেল ব্যবস্থার উন্নতিতে ঠিক কী কাজ করেছেন তার ফিরিস্তি দেন তিনি। এদিকে ছিটমহল বিনিময়ের কৃতিত্ব কার এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্য়ে দড়ি টানাটানি রয়েছে। আর শুক্রবার নির্বাচনী সভা থেকে সেই ছিটমহলের প্রসঙ্গ তুললেন মমতা।
আসলে অনেকে বলেন, ভোট এলেই নেতা নেত্রীর মুখে উঠে আসে ছিটমহলের প্রসঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, বোঝাপড়া কীসের বোঝাপড়া! অসম বর্ডারের সঙ্গে বোঝাপড়া! রাজবংশী ভাইবোনেদের দন্ডবত। ছিটমহল কে করেছিল? বলতে হবে আপনাদের। আমি করে দিয়েছিলাম ছিটমহল। বিজেপি নয়। অন্য কেউ নয়। এটা মাথায় রাখবেন। কোচবিহার এয়ারপোর্ট কে করে দিয়েছে, আমি করে দিয়েছি। আমি করে দিয়েছি। ময়নাগুড়ি- যোগীধাপা রেললাইন কে করেছে। আমি করে দিয়েছি। উত্তরকন্যা, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, পদাতিক এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে আমি করেছি। আমি ভুলে যাইনি। কোচবিহারকে হেরিটেজ টাউন আমি করেছি। মনে রাখবেন যখন রেল মিনিস্টার ছিলাম, একলাখি বালুরঘাট রেললাইন কে করেছে, আমি করেছি। বালুরঘাট- হিলি রেললাইন কে করেছে, আমি করেছি। আলুয়াবাড়ি-শিলিগুড়ি রেললাইন কে করেছে, আমি করেছি। পদাতিক এক্সপ্রেস, এনজেপি- আসানসোল সহ একাধিক ট্রেনের ফিরিস্তি দিয়ে বলেন, আমি করে দিয়েছি। কোচবিহার স্টেশন কে করেছে? আমি করেছি। জয়ী সেতু কে করেছে? আমি করেছি। পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় কে করেছে? রাজবংশী আকাদেমি কে করেছে? কামতাপুরী আকাদেমি কে করেছে? আমি করেছি। চিলা রায়ের মূর্তি কে করেছে? রাজবংশী স্কুল কে করেছে? আমরা করব সব,আর ভোট পাবে বিজেপি , এটা কখনও হয়।
২০১৫ সালের ৩১শে জুলাই মধ্যরাতে ছিটমহলে উড়ছিল জাতীয় পতাকা। দীর্ঘ বঞ্চনার অবসান। নতুন সকালের আশায় দিন গোনা শুরু করেছিলেন বাসিন্দারা। বাংলাদেশের ৫১টা ছিট যুক্ত হয়েছিল ভারতের ভূখন্ডের সঙ্গে। ১১১টি ভারতীয় ছিট যুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশের সঙ্গে। কার্যত নাগরিকত্ব পান সেখানকার বাসিন্দারা। তবে ছিটমহল বিনিময় চুক্তির কৃতিত্ব কাদের, এনিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তরজাও কিছু কম হয়নি। এবারের ভোট বাজারেও চলছে সেই তরজা। ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল। তোর্সা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। এলাকায় রাস্তা তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ এসেছে।পরিষেবাগত কিছু সমস্যাও থেকে গিয়েছে এখনও। একটা সময় ছিটমহলের বাইরে এসে শিক্ষা নেওয়া, চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও নানা কাঠখড় পোড়াতে হত বাসিন্দাদের। অনেকেই অন্য কাউকে অভিভাবক সাজিয়ে কোচবিহার বা দিনহাটার স্কুল কলেজে ভর্তি হতে বাধ্য হতেন। তবে সেই ‘নেই রাজ্যের’, সেই উপেক্ষার, নাগরিকত্ব না থাকার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁরা।কিন্ত তবুও ভোট এলেই ছিটমহলের প্রসঙ্গ তোলেন নেতারা।