এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কড়া বার্তার মুখে পড়লেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা। তাঁকে বিজেপি প্রার্থী হেমা মালিনীর বিরুদ্ধে ‘অমর্যাদাকর, অশ্লীল এবং অসভ্য’ মন্তব্য করার জন্য নোটিশ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এমনকী আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে এই কংগ্রেস নেতার উত্তর চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি পৃথক নোটিশও জারি করা হয়েছে। সেখানে দলীয় প্রার্থী এবং নেতাদের এমন ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য কংগ্রেস সভাপতিকে আগের পরমার্শ স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন এই মর্মে গত ৫ এপ্রিল বিজেপির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। হরিয়ানায় লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় বিজেপির সংসদ সদস্য হেমা মালিনীর মর্যাদার বিরুদ্ধে যৌনতা, অশ্লীল এবং অনৈতিক বক্তব্য প্রকাশ্যে করেছেন এই কংগ্রেস নেতা। যা আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। এই ধরনের মন্তব্য প্রার্থীর ব্যক্তিগত জীবনকে কালিমালিপ্ত করার সামিল বলেও নালিশ করেছে বিজেপি। আর তার প্রেক্ষিতেই জারি হয়েছে নোটিশ। নির্বাচন কমিশনের নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যে মন্তব্য আপনার দ্বারা করা হয়েছে সেটা শুধুমাত্র হেমা মালিনীর বড় অপমান তা নয়, সংসদ সদস্য হিসাবে তার অবস্থানকে অসম্মান করেছে এবং সমস্ত মহিলা বিধায়ক এবং জনজীবনে মহিলাদের অপমান করেছে।’
আরও পড়ুন: ‘ডিসেম্বর মাসেই সরকার ভেঙে যাবে’, শুভেন্দুকে পাশে নিয়ে ডেডলাইন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
অন্যদিকে রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাকে হিন্দি ভাষাতেও নোটিশে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন তাঁদের কথা যোগ করেছে। এই মন্তব্যগুলি অত্যন্ত অসম্মানজনক, অশ্লীল এবং অসভ্য বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই মন্তব্য আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই কথাও লিখেছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং এখন চাপে পড়েছেন কংগ্রেস নেতা। তবে নির্বাচন কমিশন নোটিশে বলেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কংগ্রেস নেতার পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলে ধরে নেওয়া হবে যে তাঁর বলার কিছু নেই। আর নির্বাচন কমিশন তখন কোনও রেফারেন্স ছাড়াই এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে। কদিন আগে কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয় শ্রীনেত বিজেপি প্রার্থী কঙ্গনা রানওয়াত সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেছিলেন। আবার এক কংগ্রেস নেতা করলেন হেমা মালিনীকে নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এছাড়া জাতীয় স্তরে এই বিষয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে’কে এপ্রিল মাসের পরামর্শ বার্তা সম্পর্কে অবগত করেছে নির্বাচন কমিশন। এই বিষয়ে খাড়গে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারে নারীদের প্রতি কোনও ধরনের অসম্মানকর মন্তব্য করা যাবে না।’ তবে নির্বাচন কমিশন সমস্ত দলের নেতাদের প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখার সময় মহিলাদের সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। আর দলের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে খাড়গেকে আগামী শুক্রবারের মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে বলেছে। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক যে নির্বাচন কমিশন এটিকে আপনার দলের নজরে আনা সত্ত্বেও কংগ্রেসের প্রচার করার সময় নেতারা এখনও মহিলাদের সম্মান এবং মর্যাদার বিরুদ্ধ বক্তব্যে লিপ্ত হচ্ছে।’