কলকাতার রেড রোডে ইদের নমাজের মঞ্চে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একযোগে আক্রমণ করল বাম ও বিজেপি। বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই বক্তব্যের সমালোচনা করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্যসভায় বাম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এমনকী নৈতিকতার বোধ থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ করতেন বলে মন্তব্য করেন বিকাশবাবু।
সুকান্তর আক্রমণ
এদিন মমতাকে আক্রমণ করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘ইদের মতো একটা ধর্মীয় মঞ্চে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখছেন এতে ইদের মঞ্চকে ছোট করা হচ্ছে। ইদের মঞ্চ থেকে এই ধরণের কথা বলা উচিত নয়, ধর্মীয় কথাই বলা উচিত। শান্তি সৌহার্দ্যের কথা বলা উচিত। সয়নে - স্বপনে মুখ্যমন্ত্রী যে সব সময় ইডি - সিবিআই দেখছেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি দেখছেন, এর মানে হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পাচ্ছেন, ওনার কাছের কেউ হয়তো কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে পড়তে পারে। এই ভয় ভালো। চোরেরা যদি ভয় পায় সেটা ভালো জিনিস’।
আশঙ্কা প্রকাশ বিকাশের
মমতাকে আক্রমণ করেন বিকাশরঞ্জনবাবুও। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোটাকে নষ্ট করতে চাইছেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করতে গোটা দেশে মোদীর যেমন একটা ভূমিকা রয়েছে, মমতা পশ্চিমবঙ্গে সেটা ত্বরান্বিত করছেন। মোদীর হাতকে শক্ত করছেন। প্রত্যেকটা কেন্দ্রীয় সংস্থা এখানে আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে। সেই আদালতকেও এখানে অবমাননা করা হচ্ছে। এই ভদ্রমহিলা মারাত্মক ক্ষতি করছেন, গোটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংবিধানের’।
মমতার ইস্তফা দাবি করে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুলিশমন্ত্রী। তাঁর সামান্য নৈতিক জ্ঞান থাকলে গত কালের রায়ের পর তিনি পদত্যাগ করতেন। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে চলে যাচ্ছে। এরাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে উনি একেবারে মাটির তলায় নামিয়ে দিলেন। দুর্নীতি হোক বা সামান্য খুন, পুলিশ তার তদন্ত করতে পারে না। অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ তৃণমূলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলে পুলিশ ভয় পায়। আর মুখ্যমন্ত্রী আগে থেকে ঠিক করে দেন কে অপরাধী আর কে অপরাধী নয়। এই ভাবে গোটা তদন্তপ্রক্রিয়াকে উনি নষ্ট করছেন। সাংবিধানিক কাঠামোকে তিনি নষ্ট করে দিচ্ছেন। এটা ভয়ের ব্যাপার’।
বৃহস্পতিবার ইদের নমাজে রাজনৈতিক ভাষণ দিয়ে মমতা বলেন, আপনাদের আশীর্বাদে আমরা এখানে আছি। যদিও এখানে বলা উচিত নয়, কিন্তু ইলেকশনের সময় মনে রাখবেন, ফাইট আমাদের সাথে বিজেপির। দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোট কী করবে আমরা দেখে নেব। কিন্তু বাংলায় আমরা লড়ছি বিজেপির সাথে। একটা কোনও ভোটও যেন অন্য তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া কোনও দলে না যায়।’