হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচার সভায় বক্তব্য রাখতে শুরু করেছিলেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন। কিন্তু বিধায়কের দাবি মাঝ পথেই তাঁর বক্তব্য থামিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বলাগড় ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব, হুগলির যুব তৃণমূল নেতৃত্ব। এই ঘটনার সময় তাঁরা কার্যত নীরবই ছিলেন। ক্ষুদ্ধ বিধায়ক মঞ্চ থেকে নেমে সোজা চলে যান জিরাটে নিজের বিধায়ক অফিসে। সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
সাংবাদিকদের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, 'দলে বার বার অপমানিত হচ্ছি। আমি বহিরাগত, অনুপ্রবেশকারী, এই সমস্ত কথা বিজেপি সিপিএম বলছে না, বলছে আমার দলের লোকেরাই। আমি সব কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে যাব কেন স্থানীয় নেতারা যখন আছেন?'
বলাগড়ে নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে মনোরঞ্জন ব্যপারীকে। কিন্তু তাঁর অভিযোগ তাঁকে কাজই করতে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাকে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছে, আমার কী অধিকার রয়েছে? নির্বাচন পরিচালনার জন্য আমাকে কী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে? কতখানি সক্ষমতা আমার রয়েছে? সবইতো তারা নিজেদের হাতে কেন্দ্রীভূত করে রেখেছে? আমি শো পিস’
আরও পড়ুন। ভোট মিটলেই পদ ছাড়বেন মমতা, মুখ্যমন্ত্রী হবেন তাঁর নিকটাত্মীয়: অভিজিৎ গাঙ্গুলি
বিধায়কের অভিযোগ, কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে, সেখানে একজন তাঁর নিজের লোক নেই। তিনি বলেন, 'যেভাবে কমিটি তৈরি হয়েছে সেখানে তাদের মন মত লোককে রাখা হয়েছে। আমার মন মতো কেউ নেই। চেয়ারম্যানের নিজের পছন্দের দুটো লোক থাকতে পারবে না কমিটিতে?'
তাঁর সংযোজন, 'দিদির আদেশে তৃণমূল দলটাকে শক্তিশালী করতে চেয়েছি। গত তিন বছরে আমি সাধ্যমত সেটা করেছি। স্থানীয় নেতাদের তা মনঃপুত নয়।' তাঁর মতে স্থানীয় নেতাদের জনপ্রিয়তা কমছে বলেই তাঁর উপর 'রাগ' নেতাদের।
বলাগড়ের একতারপুরে শনিবার সারাদিন প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যায় বকুলতলায় একটি জনসভা হয়। সেই সভাতেই বক্তব্যের মাঝে থামিয়ে দেওয়া হয় মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে।
এ নিয়ে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আমরা লোকসভা নির্বাচনে লড়তে এসেছি। তৃণমূল ভালো সংগঠন। এখানে সকলে মিলে মিশে কাজ করি। মতোবিরোধ হয়তো থাকতে পারে। তবে সবসময় এটা মনে রাখতে হবে যে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।' বিধায়কের বক্তব্য থামিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি জানান, তিনি যেহেতু কিছু দেখনি তাই তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। ভবিষ্যতে সাংসদ হয়ে এলে, এখানে সবাই মিলেমিশে থাকেন তা নিশ্চিত করবেন বলেন জানান রচনা।