কর্ণাটক নির্বাচন নিয়ে টুইট মোদীর, মাথা পেতে মানলেন ফলাফল। টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী লিখলেন, ‘কর্ণাটক নির্বাচনে যাঁরা আমাদের সমর্থন করেছেন আমি তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি বিজেপি কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমেরও প্রশংসা করতে চাই। আমরা আগামী দিনে আরও জোরালোভাবে কর্ণাটকের সেবা করব।’ এরপর কংগ্রেসের উদ্দেশে তিনি লিখলেন, ‘কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের জন্য কংগ্রেসকে অভিনন্দন। জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে তাদের প্রতি আমার শুভকামনা।’
উল্লেখ্য়, এবারের নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কর্ণাটকে অনেক জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রচারের শেষ ১০ দিনে সেরাজ্যে নিয়মিত গিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর ‘ব্র্যান্ড’ও বিজেপিকে ক্ষমতায় ফেরাতে পারল না এই দক্ষিণী রাজ্যে। এই আবহে এখন দক্ষিণের কোনও রাজ্যেই ক্ষমতায় থাকল না বিজেপি। এদিকে বিজেপির এই হারকে 'মোদীর হার' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, এবারে কর্ণাটকে সরাসরি রাহুল বনাম মোদীর লড়াই হয়েছিল। আর তাতে জয়ী হয়েছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ।
এবারে ভোটে ভোক্কালিগা ভোট কংগ্রেসের খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে কর্ণাটকে। কর্ণাটকের মোট জনসংখ্যার মধ্যে লিঙ্গায়েত সম্প্রদায় ১৭ শতাংশ। তারপরই রয়েছে ভোক্কালিগা। তারা ১১ শতাংশ। মূলত দক্ষিণ কর্ণাটকে মাইসোর অঞ্চলে ভোক্কালিগাদের বাস। ঐতিহাসিক ভাবে ১৯৯৯ সাল থেকে ভোক্কালিগারা জেডিএস-কেই ভোট দিয়ে আসছে। তবে ২০১৮ সালে দক্ষিণ কর্ণাটক বা মাইসোর অঞ্চলে বেশ ভালো ফল করেছিল বিজেপি। সেবারে ভোক্কালিগা অধ্যুষিত এলাকায় ডবল ফিগারে আসন লাভ করেছিল বিজেপি। তবে এবার সেই আসন সংখ্যা নেমে এসেছে ৬-এ। তবে সেই অর্থে এই অঞ্চলে ভোট শতাংশ কমেনি বিজেপির। তবে এই অঞ্চলে জেডিএস-এর একটা বড় অংশের ভোট গিয়েছে কংগ্রেসের দিকে। এর জন্যই এই অঞ্চলে ৩৯টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে আগেরবার যেখানে জেডিএস জিতেছিল ২৬টি আসন, তারা এবার এই অঞ্চলে পেয়েছে মাত্র ১৪টি আসন।
এদিকে দক্ষিণের মতো মধ্য কর্ণাটকেও এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে ৭টি আসনে বিজেপি এগিয়ে। ১৭টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। হায়দরাবাদ-কর্ণাটকেও অনেকটাই এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চলে কংগ্রেস এগিয়ে ২৬টি আসনে। ১০টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। এই অঞ্চলে জেডিএস ৩টি আসনে এগিয়ে। এদিকে কর্ণাটকে সার্বিক ভাবে পিছিয়ে পড়লেও বেঙ্গালুরু এলাকায় কংগ্রেসকে টক্কর দিয়েছে বিজেপি। এই অঞ্চলের ১৫টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে ১৩টি আসনে। এছাড়া উপকূলীয় কর্ণাটকে অবশ্য এগিয়ে বিজেপি। এই অঞ্চলে ১২টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। ৬টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। এই অঞ্চল থেকেই সূচনা হয়েছিল হিজাব বিতর্কের। অপরদিকে উত্তর কর্ণাটকে বিজেপি অনেকটাই জমি হারিয়েছে। এই অঞ্চলে ৩৩টি আসনে এগিয়ে কংগ্রেস। বিজেপি এগিয়ে মাত্র ১৬টি আসনে।