প্রোটোকল এবং সৌজন্য বজায় থাকল। তারইমধ্যে নয়া সরকারের প্রথমদিনেই কার্যত দ্বৈরথে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যপালের ঘুরিয়ে সমালোচনার জবাবে মমতা জানালেন, শেষ কয়েক মাসে তাঁর হাতে প্রশাসন ছিল না। সেই সময় প্রশাসনের অন্দরে কিছুটা ‘অযোগ্যতা’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
আজ (বুধবার) একেবারেই প্রোটোকল মেনেই শপথ নেন মমতা। রাজ্যপালের সঙ্গে ছবিও তোলেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা জানান, তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে করোনা মোকাবিলার উপর সবথেকে বেশি জোর দিচ্ছেন। তারপরই অগ্রাধিকার পাবে ভোট-পরবর্তী ‘বিক্ষিপ্ত’ হিংসার ঘটনা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা। সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সংহতি বজায় রাখার আর্জি জানান। বলেন, ‘বাংলা কিন্তু অশান্তি পছন্দ করে না। আমি নিজেও করি না। আমি সবাইকে উপযুক্ত পদক্ষেপের আর্জি জানাচ্ছি, যাতে কোনও হিংসা না হয়। কোথাও কোথাও নির্বাচনের পর বিক্ষিপ্ত ঘটনা হয়। আমি আজ থেকে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব নিচ্ছি।’ সেইসঙ্গে সাফ জানিয়ে দেন, অশান্তি করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মমতার বক্তব্য শেষে কথা বলেন ধনখড়। শুরুটা একেবারেই সৌজন্য মেনেই করেন। কিছুটা পরই রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে ঘুরিয়ে মমতার ভূমিকার সমালোচনা করেন। বলেন, ‘আমি আশা করছি যে সংবিধান এবং আইন মেনে প্রশাসন কাজ করবে। ভারতে দুর্দান্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আছে।’ সেইসঙ্গে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা গভীর সংকটে আছি। আমি দেশের ভিতর এবং বাইরে থেকে খবর পাচ্ছি যে মানুষ উদ্বিগ্ন আছেন। আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলাম। আমি তাঁকে জানানোর পর তিনি পদক্ষেপ করেছেন।’ সেখানেই অবশ্য থামেননি রাজ্যপাল। জানান, তাঁর বিশ্বাস যে রাজ্যে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন মমতা। হিংসার ঘটনায় যাঁরা আহত (বিশেষত শিশু এবং নারী) হয়েছেন, তাঁদের সাহায্য করারও কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পাঠ পড়িয়ে মমতার সরকারকে ‘নয়া প্রতিজ্ঞা, নয়া দৃষ্টিভঙ্গি’ নিতে বলেন ধনখড়।
নিজের ভাষণ শেষে মাইক রেখে দিচ্ছেন রাজ্যপাল। কিন্তু তাঁর থেকে মাইক নেন মমতা। বলেন, 'আমি এক্ষুণি শপথ নিলাম। তার আগে আপনারা জানেন নির্বাচন কমিশনের অধীনে এই সরকারের পুলিশরা কাজ করেছেন। সুতরাং কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। কোনও কোনও রাজনৈতিক দল যেখানে জিতেছে, সেখানে অত্যাচার বেশি করছে। সেখানে আমরা দেখে নেব যাতে কোনওরকমভাবে কেউ যেন রেহাই না পায়। আজই গিয়ে নয়া কাঠামো তৈরি করব। কারণ তিন মাস এই কাঠামো আমার ছিল না। অনেক অকার্যকারিতা এবং অযোগ্যতা ছিল। আমি আবেদন করব কেউ যেন প্রতিহিংসাপরায়ণ কাজ না করেন।'