এ যেন ঠিক উলটপুরান! পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের সূতিকালগ্নে যখন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে নেতারা বিজেপিতে যাচ্ছেন, তখনই নির্বাচনের দু’সপ্তাহ আগে চমক দেখা গেল রাজ্য–রাজনীতি। বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রকেরও দায়িত্বে ছিলেন এই বর্ষীয়ান নেতা। রাজনীতির জীবনের শুরুতে জনতা দলে যোগ দেন যশবন্ত। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে যোগদান করেন বিজেপিতে। সেই তিনি এলেন ঘাসফুল শিবিরে।
জানা গিয়েছে, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এই প্রাক্তন আইএএস অফিসার। অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রীসভাতেও অর্থমন্ত্রীর পদ সামলেছেন তিনি। এছাড়াও ছিলেন বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বেও। শনিবার তৃণমূল ভবনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন এই প্রবীণ বিজেপি নেতা। তিনি পথপ্রদর্শক হিসেবে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করবেন বলে জানান সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
বরাবরই মোদী মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে বেসুরো গাইতে দেখা গিয়েছে এই নেতাকে। ২০১৮ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির থেকে ইস্তফা দেন জনতা দল থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করা এই গেরুয়া শিবিরের জনপ্রিয় নেতা। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের ‘স্বেচ্ছাচার’ মেনে নিতে না পেরেই বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কার্যত উলটো পথে হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের অংশীদার হতেই। এদিন যশবন্ত সিনহা বলেন, ‘বাংলাই পথপ্রদর্শক হবে। এই বিধানসভা নির্বাচন কেবলমাত্র বাংলার জন্যই নয়, ২০২৪ সালের সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যেও বড় ভূমিকা পালন করবে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকতেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান।’
এদিন সকালেই তৃণমূল ভবনে তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যশবন্তকে দলে স্বাগত জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য আসতে পারেননি তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে যশবন্ত দলকে আরও সমৃদ্ধই করলেন। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের আগে এদিন অসুস্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন যশবন্ত সিনহা। দু’জনের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিট কথাবার্তা হয়।প্রসঙ্গত, পড়শি ঝাড়খণ্ডের নিবাসী যশবন্ত। সেখানে তৃণমূলের সংগঠনকে তিনি গড়ে তুলতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার।