কামাথিপুরা, মুম্বইয়ের রেড লাইট এলাকা। সেই এলাকার একসময়ের ত্রাশ ছিলেন গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি। যিনি ম্যাডাম অফ কামাথিপুরা নামেই পরিচিত। সেই গঙ্গুবাইয়ের চরিত্রেই এবার আলিয়া ভাট। বুধবার প্রকাশ্যে এল আলিয়া ভাটের বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ –র ফার্স্ট লুক পোস্টার। প্রথমবার সঞ্জয় লীলা বনশালির পরিচালনায় কাজ করতে চলেছেন আলিয়া।
এদিন সামনে এসেছে দুটি ফার্স্ট লুক পোস্টার। দুটো পোস্টারে আলিয়ার চরিত্রের বৈপরীত্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে- এক সাধারণ কিশোরী থেকে এক নির্মম গণিকালয়ের মালকিন।
বনশালি প্রোডাকশন এই দুটি পোস্টার শেয়ার করে তার ক্যাপশনে লিখেছে, ‘শক্তি..সাহাস..ভয়! একদৃষ্টিতে হাজার অনুভূতি। প্রকাশ্যে গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ –র ফার্স্ট লুক পোস্টার। ২০২০-র ১১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রেক্ষাগৃহে’।
প্রথম পোস্টারটি তুলে ধরা হয়েছে লং শটে, যেখানে আলিয়া বসে রয়েছেন একটি স্কার্ট, ব্লাউজ পরে। মাথায় টিপ, ফিতে দিয়ে বিনুনি করা চুল, হাতে কাঁচের চুরি। পাশে টেবিলে রাখা একটি পিস্তল। অন্য পোস্টারটি মনোক্রমে আলিয়ার মুখের ক্লোজআপ, যদিও সেই ছবিতে উজ্বল আলিয়ার মাথার লাল টিপ।
এর আগে মঙ্গবার ‘গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ –র মোশন লোগো সামনে এনেছিলেন আলিয়া ভাট।
কে ছিলেন এই গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি?
ষাটের দশকে গোটা কামাতিপুরার কর্ত্রী ছিলেন গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি। খুব অল্প বয়সে জোড় করে যৌনবৃত্তিতে নামানো হয়েছিল তাঁকে। এর পর সেই গঙ্গুবাই হয়ে ওঠেছিলেন গোটা কামাতিপুরার হর্তাকর্তা বিধাতা। কিন্তু জোড় করে যে সব মেয়েদের এই পেশায় ঠেলে দেওয়া হত তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল তিনি।
এস হুসেন জাইদির লেখা বই 'মাফিয়া কুইনস অফ মুম্বই' থেকে জানা যায়, মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাবার হিসাবরক্ষকের সঙ্গে গঙ্গা হরজীবনদাস কাথিওয়াড়িয়া গুজরাত থেকে মুম্বইয়ে পালিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু প্রেমে ধোঁকা খেতে হয়েছিল এই কিশোরীকে। বিয়ে করেও স্বামী তাঁকে বিক্রি করে দেয়। ডন করিম লালা একাধিক গ্যাং মেম্বার তাঁকে বারবার ধর্ষণ করে। তবুও হাল ছাড়েন গঙ্গুবাই। ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। শেষমেষ করিম লালার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন গঙ্গুবাই। তাঁর এই অদম্য মনোভাব জয় করে নিয়েছিল করিম লালার মন। তাঁকে নিজের বোনের সম্মান দেয় করিম লালা। এরপরই কামাতিপুরায় একটি গণিকালয় শুরু করেন গঙ্গুবাই।
মিড-ডে খবর অনুযায়ী, আলিয়ার ঠাকুরদা নানাভাই ভাট কাথিয়াওয়াড়ের গুজরাতি ব্রাহ্মন ছিলেন। তবে আলিয়া সেই অঞ্চলের ভাষা বা সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশেষ অবগত নন। বনশালি ছবির প্রি-প্রোডাকশনে কতখানি সময় দেন সে কথা কারুরই অজানা নয়। জানা যাচ্ছে এই ছবির জন্য আলিয়ার উচ্চারণ সঠিক করতে বনশালি একজন শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। পাশাপাশি মনোজ যোশি, সুপ্রিয়া পাঠকের মতো বেশ কয়েকজন গুজারাতি থিয়েটার ব্যক্তিত্বের কাছেও নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন আলিয়া।
এর আগে বনশালির ইনশাআল্লায় কাজ করার কথা ছিল আলিয়ার। তবে সলমন খান সেই প্রোজেক্ট থেকে সরে দাঁড়ানোর পর মাঝপথেই থমকে যায় এই ছবি। তবে অবেশেষে বনশালির নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে আলিয়ার।