পুনম পাণ্ডের আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ এখনও মেনে পারেনি সিনেপ্রেমীরা। এর মাঝেই ফের শোকবার্তা মায়ানগরী থেকে। প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা-পরিচালক সাধু মেহের। হিন্দি ও ওড়িয়া ফিল্মের এই প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব শুক্রবার মুম্বইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। আরও পড়ুন-হাসপাতালে ভর্তির পেরিয়ে গেল ২৪ ঘণ্টা, এখন কেমন আছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মা নিরূপাদেবী?
পুনম ক্যানসারে আক্রান্ত জানত না কাছের বন্ধুরা, ‘বড় খবর দেব’ জানান মৃত্যুর আগেই
মৃণাল সেন, তপন সিনহা, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, সন্দীপ রায়ের মতো বাঙালি পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন সাধু মেহের। তাই বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতেও তাঁর উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল। ১৯৬৯ সালে মৃৃণাল সেনের ভুবন সোম-এর হাত ধরে হিন্দি ছবির জগতে পথচলা শুরু তাঁর। যদিও দর্শক তাঁকে সবচেয়ে বেশি চিনেছে ‘অঙ্কুর’ ছবির সুবাদে। শ্যাম বেনেগালের এই ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন সাধু মেহের। ছবিতে শাবানা আজমির সঙ্গে স্ক্রিন ভাগ করে দেন তিনি। ওড়িশার প্রথম শিল্পী হিসাবে জাতীয় সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। জগন্নাথ ভূমির এই সুযোগ্য সন্তানের কেরিয়ারের অন্যতম মালইস্টোন ‘মৃগয়া’। এছাড়াও ‘২৭ ডাউন’, ‘মন্থন’, ‘ইনকার’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে অন্যধারার ছবির পরিচিত মুখ ছিলেন সাধু মেহের। পরবর্তীতে ওড়িয়া ছবিতে জোর দেন প্রয়াত অভিনেতা। ১৯৮৯ সালে সম্বলপুরি ভাষায় তৈরি সব্যসাচী মহাপাত্রর ছবি ‘ভুখা’র জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন সাধু মেহের।
দূরদর্শনের জনপ্রিয় টেলি-সিরিজ ‘ব্যোমকেশ বক্সী’র একাধিক এপিসোডে দেখা মিলেছিল সাধুর, এছাড়াও পরবর্তী সময়ে অনিল কাপুর-ঐশ্বর্য রাই অভিনীত ‘হাম আপকে দিল মেয় রহতে হ্যায়’ ছবিতে দেখা মিলেছিল সাধু মেহেরের।
তাঁর হাত ধরেই ওড়িয়া ভাষার প্রথম সাই-ফাই ছবি তৈরি হয়, বাবুলা (১৯৮৫)। এছাড়াও পরিচালক সাধু মেহের তৈরি করেছেন অভিমান, অপরিচত, অভিলাষা-র মতো অজস্র জনপ্রিয় ওড়িয়া ছবি। ২০১১ সালে ওড়িশা সরকার তাঁকে জয়দেব সম্মান ভূষিত করে, পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ভারত সরকারের তরফে দেশের চতুর্থ সর্ব্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পদ্মশ্রী তুলে দেওয়া হয় সাধুর হাতে।
সাধু মেহেরের মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘প্রথম ওড়িয়া অভিনেতা হিসাবে অঙ্কুর ছবির জন্য জাতীয় সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন সাধু মেহর। তাঁর প্রয়াণ ওড়িয়া ফিল্ম জগতের অপূরণীয় ক্ষতি’।