নতুন বছরের শুরুতেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ওপার বাংলার টেলিভিশন অভিনেত্রী আশা চৌধুরী। গত সোমবার রাতে শ্যুটিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাজধানী ঢাকার টেকনিক্যাল মোড়ের ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর। তবে এই অস্বাভাবিক মৃত্যুকে সহজভাবে মেনে নিতে রাজি নয়, আশার শোকগ্রস্ত পরিবার। মঙ্গলবার রাতে দারুস সালাম থানায় আশা যে মোটরবাইকে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন সেই বাইকের চালক শামীম আহমেদসহ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল গ্রেফতার করা হয় শামীম আহমেদকে। আদালতে পেশ করা হলে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রথম আলো সংবাদ মাধ্যমকে তদন্তকারী অফিসার সোহান আহমেদ জানান, ‘শামীম আহমেদ আশার পূর্বপরিচিত। সেদিন তিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন’। বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পেশ করা হয়েছিল অভিযুক্তকে, বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও পরিবারের মনে দানা বেঁধেছে সন্দেহ, কারণ আড়াই ঘন্টার হিসাবে মিলছে না। পরিবার সূত্রে খবর, ৪ জানুয়ারি রাত ১১টা নাগাদ আশা ফোনে মা'কে জানিয়েছিলেন তিনি বনানী এলাকায় রয়েছে। ২০ মিনিটের মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসবেন। মিনিট পাঁচেক পর মেয়েকে ফের একবার ফোন করেছিলেন আশার বাবা।
পরিবারের অভিযোগ, বনানী থেকে আশার বাড়ি রূপনগরে ফিরতে হলে কালশী রোড ধরে আসবার কথা। ১১টার প্রায় তিন ঘন্টা পর রাত দুটো নাগাদ বাইক চালক তথা আশার বন্ধু শামীম আহমেদ ফোন করে আশার মাকে টেকনিক্যাল মোড়ের কাছে আসবার কথা জানায়। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফের ফোন করে আশার মৃত্যু সংবাদ দেয়।
আশার বাবা দুলালের অভিযোগ পুলিশের সামনে শামীম আহমেদ তিন রকমের কথা বলছে। কালশী রোড হয়ে ফেরার হলে টেকনিক্যাল মোড়ে তাঁরা কেন এবং কীভাবে গেল? শামীমের যুক্তি রাতের অন্ধকারে পথ ভুল হয়েছিল। তবে পরিবার জানায়, মেয়ের সব রাস্তা ভালোভাবে চেনা। শামীম পুলিশকে দেওয়া প্রথম বয়ানে জানায় রাস্তা পার হতে গিয়ে আশা ট্রাকে ধাক্কা খায়, সিসিটিভি ফুটেজ বলছে অন্য কথা। সেখানে দেখা গিয়েছে বাইকে থাকা অবস্থাতেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন আশা। রাত এগারোটা থেকে রাত দুটো পর্যন্ত কী ঘটেছে সেই নিয়ে কোনও সদুত্তোর দিতে পারছে না শামীম।