মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যাপিকা এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য-রাজনীতিতে তিনি চর্চায় উঠে আসেন প্রাক্তন মেয়র তথা মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘পরকীয়া’ সম্পর্কে জড়িয়ে। ‘বিবাহিত’ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সহবাস সঙ্গী বৈশাখী। মেয়ে রিলিনা তথা মেহুলকে নিয়ে সুখী সংসার তাদের। নিন্দকদর চোখ রাঙানি, কটূক্তিতে পাত্তা দেন না দুজনেই। শোভন-বৈশাখীর প্রেম নিয়ে চর্চার শেষ! পাশাপাশি শোভন-বান্ধবীর ফ্যাশন স্টেটমেন্টও থাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সহবাস সঙ্গীকে খুশি রাখার টোটকা ভালোভাবেই জানা আছে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের।
পুজোয় ডজন খানেক শাড়ি বৈশাখীকে কিনে দিয়েছেন শোভন, তবে এই ‘প্রাপ্তি-যোগ’ শুধু পুজো উপলক্ষ্য়ে নয়। মনের মানুষের জন্য কোনও শাড়ি পছন্দ হলেই কিনে ফেলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ব্ল্যাকের প্রতি শোভনের ফ্যাসিনেশন রয়েছে।’ এবার পুজোয় গোলাপি সুতোর কাজ করা একটা বালুচরি বৈশাখীকে উপহার দিয়েছেন তিনি, সঙ্গে কালো রঙা ভারী সিল্কের আরও একটি শাড়ি। শোভন-বান্ধবী বলেন,'দিন কয়েক আগে একটা দোকানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম, আমাকে বলল দু-মিনিট দাঁড়াও। ভাবলাম সিগারেট খেতে গিয়েছে হয়তো, পরে দেখলাম এই শাড়ি নিয়ে হাজির। শাড়িটা দোকানের ডিসপ্লে-তে সাজানো ছিল'।
এবার পুজোয় মেয়ে কাজ থেকেও শাড়ি উপহার পেয়েছেন বৈশাখী। জানালেন, অষ্টমী বা নবমীর দিন মেয়ের দেওয়া শাড়ি পরবেন তিনি। দুষ্টুর (শোভনকে এই নামে ডাকে রিলিনা) সঙ্গে গিয়ে বৈশাখী কন্যা মায়ের জন্য শাড়ি কিনে এনেছে।মেহুলের শাড়ি পরার প্রতি ঝোঁক থাকলেও মায়ের শাড়ি ভর্তি আলমারিতে হাত দেয় না সে।
স্লেট রঙা একটি জামদানি শোভনের কাছ থেকে উপহার পেয়েছেন বৈশাখী, এবং নীল-সবুজ রঙা কাঁথাস্টিচের একটি শাড়ি শান্তিনিকেতন থেকে শোভন কিনে এনেছেন প্রিয়তমার জন্য, মাহীশূর থেকে কেনা তসরের একটি শাড়িও রয়েছে বৈশাখীর পুজো-ফ্যাশনের তালিকায়। কলেজে পড়ার সময়ও মাসে একদিন করে শাড়ি পরতেন বৈশাখী। তাঁর কথায়, ‘আমি শাড়িতেই আধুনিকা থাকার চেষ্টা করতাম’। শাড়ি সেলিব্রেট করে পরতে হয়, বিশ্বাসী বৈশাখী। জোর গলায় বললেন, ‘আমি ট্রেনে যাই বা প্লেনে যাই, আমি কিন্তু শাড়ি পরি’।
এ তো গেল শাড়ির কথা! তবে পুজোয় শুধু শাড়ি নয়, মনের মানুষকে উপহার হিসাবে বই কিনে দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এবারও তার অন্যথা হয়নি। বৈশাখী বললেন, ‘আমি কিন্তু শুধু শাড়ি গিফট পাই না, শোভন আমাকে প্রত্যেক পুজোয় বই দেয়। এবার কিরা ক্যাসের সিরিজটা কিনব বলে ঠিক করেছিলাম, কিন্তু পাঁচটার মধ্যে মাত্র দু-টো বই পেলাম। কিনে দিয়েছে দিয়েছে, তবে আবার মিষ্টি করে লিখে দিয়েছে।’
হ্যাঁ, বৈশাখীর জন্য ‘দ্য ক্রাউন’ বইয়ের মলাটের ভিতর শোভন লিখেছেন, ‘তোমার জন্যও একটা মুকুট অপেক্ষা করছে এই পুজোয়, সঙ্গে অনেক ভালোবাসা-ইতি শোভন’। আর ‘দ্য বিট্রেয়েড’ বইটির ভিতরে লিখেছেন, ‘আমার প্রিয়তমা বৈশাখীর জন্য এই পুজোয়… শোভন’।