‘বিগ বস’খ্যাত সোনালী ফোগাত, যিনি ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির একজন কর্মীও, সোমবার রাতে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান গোয়ায়। বরাবরই নিজের ছন্দে বাঁচতে পছন্দ করতেন তিনি। বিগ বসে থাকাকালীন তাই তো বয়সে ছোট আলি গোনিকে ভালো লাগার কথাও নির্দিধায় শেয়ার করেছিলেন। সেই ২০১৬ সাল থেকে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে নিজেই মেয়েকে বড় করছিলেন। ১৮ বছরের মেয়ে যশোধরা ফোগাতকে রেখেই অকালে চলে গেলেন সোনালী। যা মানতে পারছেন না তাঁর ভক্তরা।
সোনালীর মারা যাওয়ার খবর পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর বিগ বসের সহকর্মীরা। রুবিনা দিলায়েক লিখেছেন, ‘খবরটা শুনে ভেঙে পড়েছি। আপনার আত্মার শান্তি কামনা করি।’ রাহুল বৈদ্য লিখেছেন, ‘সোনালি জি… খুব খারাপ কাজ হল এটা… এত জলদি কেউ যায়! এখনও তো আমার হরিয়ানায় আপনার বাড়ি যাওয়া হল না।’ জসমিন ভাসিন লিখলেন, ‘আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না… ওর জলদি চলে যাওয়াটা বেশি তাড়াতাড়িই হয়ে গেল।’ আরও পড়ুন: স্প্লিটসভিলা থেকে রণবিজয়কে সরিয়ে এলেন অর্জুন বিজলানি! ‘ফালতু হবে’ বিরক্ত দর্শক
২০২০ সালে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোনালী জানিয়েছিলেন, ‘আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমার বাবা একজন কৃষক ছিলেন। সরকারি স্কুলে দশম শ্রেণি অবধি পড়েছি। তারপর আমার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর আমি ঠিক করি নিজের পায়ে দাঁড়াব। এমন কিছু করব যাতে কেউ মেয়েদের দুর্বল না ভেবে ভুল করে। হরিয়ানায় মেয়েদের বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। সেই অধিকার শুধু পুরুষদের। আমার শ্বশুরবাড়িতেও আলাদা কিছু ছিল না। তবে ওরা আমাকে পড়িয়েছিল। কিন্তু কখনোই চায়নি আমি বাইরে গিয়ে কাজ করি। যদিও আমি আমার বরকে রাজি করাই। অভিনয় করা শুরু করি। কেউ ছিল না সেখানে আমাকে সাহায্য করতে। সমস্তকিছু আমাকে নিজেকে করতে হয়েছে। এরপর আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। এখানেও আমি আমার স্বামীকে পাশে পেয়েছি।’ আরও পড়ুন: ‘বনবনিয়ে ঘোরে, আওয়াজ করে’, মহিলা প্রতিযোগীর কোন কথায় এত ভয় পেলেন অমিতাভ?
সোনালী আরও বলেছিলেন, ‘তবে স্বামী মারা যেতেই সমস্ত কিছু বদলে যায়। বুঝতে পারি আমাদের সমাজে মেয়েদের এখনও কী নজরে দেখা যায়। একটা মেয়ে যদি সুন্দরী হয়, একা হয়, তাহলে তাঁর বাঁচার কোনও অধিকার নেই। তাঁকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। নোংরা নোংরা কথা বলা হয়। মানুষ নানা ভাবে চেষ্টা চালাতে থাকে তাঁকে বাড়িতে বসিয়ে রাখার জন্য। বা তার থেকে সুবিধে নেওয়ার জন্য। স্বামী মারা যাওয়ার পর এরকম অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে।’
টিকটক ভিডিয়ো বানিয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সোনালী। ২০০৬ সালে প্রথম কাজ করেন টিভি অ্যাঙ্কর হিসেবে। ‘আম্মা: এক মা যো লাখো কে লিয়ে বনি আম্মা’ দিয়ে অভিনয়ে ডেবিউ করেন ২০১৬ সালে। ওয়েব সিরিজ ‘দ্য স্টোরি অফ বদমাশগর’-এ তিনি কাজ করেছিলেন ২০১৯ সালে। ২০২০ সালে বিগ বস ১৪-তে ভাগ নেন তিনি।