বর্তমানে অবশ্য অভিনয় থেকে দূরেই আছেন, তবে একসময় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় রানার্স আপ হয়ে মডেলিং ও অভিনয় দুনিয়ায় নিজের যাত্রা শুরু করেছিলেন সেলিনা জেটলি। তবে অনেকেই হয়ত জানেন না, সেলিনার কেরিয়ার শুরু হয়েছিল কলকাতাতেই। প্রথমদিকে একটি মোবাইল কোম্পানিতে মার্কেটিংয়ের জব করতেন তিনি। সেই কাজের ফাঁকেই বিভিন্ন সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন।
তবে কেরিয়ারের শুরুর দিকে কাজ করিয়ে নিয়েও নাকি টাকা দেওয়া হয়নি সেলিনাকে। তার উপর জুটেছে সমালোচনা, এমন ঘটনাও ঘটেছে। ২০০১-এ মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন সেলিনা জেটলি। সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে সেলিনা লিখেছেন, ‘এই বছর ২২ বছর পূর্ণ হল যখন আমি সানজুয়ান, পিউর্তো রিকোয় ২০০১ সালে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় মিস ইউনিভার্স হই। মিস ওয়ার্ল্ড, মিস এশিয়া প্যাসিফিক-এ ভারতের দুর্দান্ত ট্রিপল জয়ের পরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা। লারা দত্ত, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ারা ঠিক তার আগের বছরই জয়ী হয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন-বিয়ে বাড়িতে দেখা হয়, সেদিন তো রাকেশ আঙ্কেল আমায় চিনতেই পারেননি: আমিশা
আরও পড়ুন-প্রথম 'চুমু', তবুও কি লাভের লাভ কিছু হল! কেমন হল কাজল-যিশুর ‘দ্য ট্রায়াল’?
সেলিনা আরও লিখেছেন, মাত্র ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ছিলাম, ১০৩ জন প্রতিযোগীর মধ্যে (আমি সেই বছর সমস্ত প্রতিযোগীদের মধ্যে আমিই উচ্চতায় সবথেকে ছোট ছিলাম) তবুও আমি রানার্স আপ হয়েয়েছিলাম। আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত, আমার দেশ এবং আমার পূর্বসূরীর উত্তরাধিকারকে ধরে রাখা। আমি খুব অল্প বয়সে (মাত্র ১৫তে) ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখি। কলকাতায় তখন নতুন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখে সংগ্রামটা সহজ ছিল না। এছাড়াও পড়াশোনার চাপ, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার চাপ তো ছিলই। সবমিলেয়ে কৈশোরেই আমায় কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল। আমি তখন ব্রণ এবং খুব এন্ডোমেট্রিওসিসেও ভুগছিলাম। পিরিয়ডের সময় গুরুতর ডিসমেনোরিয়া এবং রক্তক্ষরণের কারণে প্রায় প্রতি মাসেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। এদিকে আমার তখন জীবন নিয়ে অনেক স্বপ্ন এবং আকাঙ্খা ছিল।'
সকলে যখন সাপ্তাহিক ছুটি উপভোগ করত তখন আমি কলকাতায় শুটিং এবং র্যাম্প শোয়ে অংশ নিতাম। খুবই অল্প টাকার জন্য কাজ করেছি। অনেক সময় এমনও হয়েছে কঠোর পরিশ্রম সত্ত্বেও টাকা পাইনি। তারপরেও ক্রমাগত সমালোচনা ও প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়েছি। শুনতে হত আমি খুব সাদা, খুব রোগা, যথেষ্ট লম্বাও নই… ইত্যাদি। বহু বছর আমাকে এমন অবমাননাকর মুখে পড়তে হয়েছে। যা হয়তা আমাকে পরে অনন্য করে তুলেছে। কিশোরী একটি মেয়ের জন্য সেই যাত্রা সত্যিই অপ্রতিরোধ্য ছিল।'
সব শেষে সেলিনা লিখেছেন, ‘এই মুকুটগুলি... এত সব কিছুর পরেও ঝকঝকে পাথরের তৈরি নয়, এগুলি নিছক সংকল্প, শক্তি, উৎসর্গ, নিষ্ঠা, সংগ্রাম এবং অসীম সাহসের দ্বারা তৈরি৷ সৌন্দর্য হল একটা শক্তিশালী হাতিয়ার। আমি কৃতজ্ঞ যে একজন অভিনেতা, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ইউএন ইকুয়ালিটি চ্যাম্পিয়ন এবং একজন অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি। এই সুন্দর হওয়ার অর্থ সুন্দর হয়ে জন্মানো নয়। এটি জীবনব্যাপী বেঁচে থাকা এবং একজন মানুষ হিসেবে নিজের সর্বোচ্চ সম্ভাবনা অর্জন করার জন্য প্রচেষ্টা।'