পথের পাঁচালী-এই নামটা শুনলেই বাঙালি পৌঁছে যায় নিশ্চিন্দপুরের অলিতে-গলিতে। বিভূতিভূষণের এই উপন্যাস সেলুলয়েডে জীবন্ত হয়ে উঠেছিল অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিত রায়ের কল্পনার জাদুতে। বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে অতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে পথের পাঁচালী। সত্যজিত সৃষ্ট এই মাস্টার পিস যদি সাদাকালোয় না হয়ে রঙিন হত! তাহলে কেমন দেখাতো অপু-দুর্গার এই চিরন্তন কাহিনি? ভেবে দেখেছেন কখনও? এবার সেই হদিশ দিলেন এক বাংলাদেশি ভিডিয়ো এডিটর রাকিব রানা। ওপার বাংলার এই সম্পাদক একটি বিশেষ টেকনোলজির সাহায্যে পথের পাঁচালীর একটি রঙিন ভিডিয়ো সামনে এনেছেন। নিমেষেই ভাইরাল হয়ে যায় এই ভিডিয়ো।
আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স বা এআই টেকনোলজির সাহায্যে এই ভিডিয়োটি তৈরি করা হয়েছে। এখনও পরীক্ষামূলকভাবেই এই টেকনোলজির ব্যবহার শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অভিনেত্রী জয়া আহসান সেই ভিডিয়ো শেয়ার করে লেখেন,'পথের পাঁচালী রঙিন হলে যেমন লাগতো...'
অনেকেই এই নতুন এক্সপেরিমেন্টকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন,অনেক নেটিজেনদের মতেই আবার পথের পাঁচালী সাদাকালোতেই ভালো,সেই নিয়ে এই ধরণের পরীক্ষানীরিক্ষায় খুশি নন তাঁরা। বিভূতিভূষণের লেখা অপরাজিত উপন্যাসের শেষভাগ নিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রর ছবি ‘অভিযাত্রিক’। তিনি জয়ার পোস্টের কমেন্ট বক্সে লেখেন, ‘যদিও এটা একটা খুব সুন্দর এবং প্রশংসনীয় প্রয়াস,তবুও দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর টোনাল কোয়ালিটিতে একটা অনুভূতি এবং গভীরতার অভাব রয়েগিয়েছে।ভিস্যুয়ালি এটা একটা ষাটের দশকের সাধারণ ছবি মনে হচ্ছে। সাদা-কালোর কথা মাথায় রেখেই পথের পাঁচালী তৈরি হয়েছিল...হয়ত স্রষ্টা আরও রিসার্চ করে এটা পুনরায় তৈরির চেষ্টা করবেন’।
প্রসঙ্গত শুভ্রজিত মিত্রর তৈরি অভিযাত্রিক ছবিটিও সাদা-কালোতেই তৈরি হয়েছে। অপুর পথচলার শেষভাগের এই গল্পে অপু হিসাবে দেখা মিলবে অর্জুন চক্রবর্তীর।
যদিও এই প্রথম নয়,এর আগেও ‘পথের পাঁচালী’র বেশ কয়েকটি রঙিন ভিডিয়ো সামনে এসেছে AI টেকনোলজিকে ব্যবহার করে।
১৯৫৫ সালের ২৬ অগস্ট মুক্তি পেয়েছিল পথের পাঁচালী। সত্যজিত রায়ের প্রথম ছবি সাড়া ফেলেছিল বিশ্বজুড়ে। কান চলচ্চিত্র উত্সবেও প্রশংসা কুড়োয় পথের পাঁচালী,যা ভারত তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের এক অমূল্য সম্পদ।