শোয়ের নাম ‘দিদি নম্বর ওয়ান’, রচনার এই শোয়ে প্রায়দিনই এসে হাজির হন কোনও না কোনও সেলেব। তাঁদের কথায়, গল্পে উঠে আসে নানান অজানা কথা। সম্প্রতি সেই শোয়েই এসে হাজির হয়েছিলেন টেলিপর্দার তিন জনপ্রিয় অভিনেতা অনুভব কাঞ্জিলাল, শমীক চক্রবর্তী ও সপ্তর্ষি রায়। আর এই তিন অভিনেতার সঙ্গে ছিলেন তাঁদের মায়েরা। সেখানেই নিজের জীবনের কঠিন সময়ের কথা বলেন 'ইচ্ছে পুতুল' ধারাবাহিকের ‘জিষ্ণু’, অর্থাৎ অভিনেতা শমীক চক্রবর্তী।
রচনাকে শমীকের মা সোনালী চক্রবর্তী জানান, তিনি থাকেন কৃষ্ণনগরে, আর তাঁর ছেলে থাকে কলকাতায়। রচনা সোনালীকে প্রশ্ন করেন, ‘ছেলেকে তাহলে মিস করেন তো?’ সোনালী বলেন, 'হ্য়াঁ, আমি তাই মাঝে মধ্যেই ছেলের কাছে কলকাতায় চলে আসি।' কথা প্রসঙ্গে শমীক বলেন, তাঁর জীবনে, কেরিয়ারে মায়ের অবদান অনেকটাই।
ঠিক কী বলেন শমীক চক্রবর্তী?
শমীক বলেন, ‘আমি তো কৃষ্ণনগরের ছেলে। প্রথমে যখন কলকাতায় আসি, তখন জানতাম না কীভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকব, কোথায় অডিশন হয়? কলকাতায় ছোট্ট একটা রুমে থাকতাম, আমার এত বড় চেহারা ওই রুমে ঠিক সেটও হত না। তবে ওখানেই থাকতাম, কারণ জানতাম কষ্ট করে নিজের পায়ে দাঁড়াতেই এসেছি। সেসময় রান্না করতাম, বাসন মাজতাম, ঘর মুছতাম, বাথরুমও পরিষ্কার করেতাম, সব কাজই আমি নিজে করেছি। এগুলো মা সবই জানত, তবে বাবাকে কিছুই বলেনি, কারণ বাবা একটু এসবের বিরোধী ছিল। বাবা এই কেরিয়ারের বিরোধী ছিলেন বলে আমার খোঁজও নেয়নি, বেশকিছুদিন আমার সঙ্গে কথাও বলেনি। এদিকে তখন তো আমার কোন ইনকামও নেই, তাই মা-ই আমায় ওই ঘরের ভাড়া দিত। এরপরে অবশ্য আমি মডেলিং শুরু করি। সেখান থেকে যা আয় হত, তা দিয়েই বাড়িভাড়া দিতাম।’
কলকাতায় ছোট্ট থাকার জায়গা প্রথম দেখে তাঁর বাবার ঠিক কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, সেকথা বলতে গিয়ে শমীক বলেন, ‘বাবা যখন কলকাতায় এসে আমার ছোট্ট ফ্ল্যাট দেখলেন, বললেন এই তুই এই ফ্ল্যাটে থাকিস কী করে! এ তো পাখির খাঁচা! আমি বললাম, কী করব, যা ইনকাম এই ফ্ল্যাটেই থাকতে হয়। তখন বাবা আমাকে একটা ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছিল। আর এটা হয়ত অনেকেই জানেন না যে ইচ্ছে পুতুল টেলিকাস্ট হওয়ার ১ মাস পর আমি জিষ্ণু চরিত্রটি পাই।’
এরপরে জীবনের কী পরিকল্পনা রচনা জানতে চাইলে শমীক জানান, ‘যেমন যেমন কাজ আসবে করব, পরিশ্রম করব। আমি ফলের চিন্তা না করেই খাটি। আমি জানি, বাবা-মায়ের বয়স হচ্ছে, এবার আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে।’