বর্তমানে বাংলা টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় খলনায়িকা মিশকা অর্থাৎ অভিনেত্রী অহনা দত্ত। সূর্য-দীপার প্রেম কাহিনির সবচেয়ে বড় কাঁটা মিশকা। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র সুবাদে রাতারাতি খ্যাতির শিখরে পৌঁছেছেন অহনা। মিশকা চরিত্রে দুর্ধর্ষ অভিনয় করে সকলের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন অহনা। ১১ই জুন রবিবার ২০-তে পা দিলেন অভিনেত্রী। আর জন্মদিনেই সংবাদ শিরোনামে অহনার ব্যক্তিগত জীবন।
গত কয়েকদিন ধরেই টেলিপাড়ায় গুঞ্জন ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র রূপটান শিল্পীর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন অহনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের পিডিএ নজর এড়ায় না কারুর। পরস্পরকে আগলে আদুরে ছবিও পোস্ট করেন তাঁরা। সেই নিয়ে ফিসফিসানি কম নেই। এর মাঝেই মেয়ের চর্চিত প্রেমিককে নিয়ে বিস্ফোরক অহনার মা চাঁদনি গঙ্গোপাধ্যায়। মায়ের ঘর ছেড়ে এখন একা সংসার পেতেছেন পর্দার মিশকা। এই বছর জন্মদিনটাও পরিবারকে ছাড়াই কাটিয়েছেন অভিনেত্রী।
মেয়ের জন্মদিনে চাঁদনি দেবী ফেসবুক পোস্টে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন অহনার চর্চিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে। তিনি লেখেন, ‘২০০৩-এ এই দিনটাই বেঁচে থাকার একটা মানে খুঁজে পেয়েছিলাম। সেটাও দীপঙ্কর রায় আমার থেকে কেড়ে নিল। আজ আমার চেয়ে খারাপ কেউ না। তাও বলবো বেঁচে থাকার অধিকারটাও যে কেড়ে নিল তার ভালো হোক,শুভ জন্মদিন।’ এই পোস্ট সোশ্যালে ভাইরাল হতেই নেটিজেনদের একাংশের দাবি খ্যাতি আর ‘প্রেমিক’কে পেয়ে নিজের মাকেই ভুলে গিয়েছেন এই অভিনেত্রী। পাশাপাশি দীপঙ্করের অতীত টেনেও নানান মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যালে। দু-বার বিয়ে ভেঙেছে দীপঙ্করের, টেলিপাড়া সূত্রে খবর এমনটাই।
মায়ের সঙ্গে মন কষাকষি থেকে দীপঙ্করের সঙ্গে চর্চিত প্রেম নিয়ে জানতে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল মিশকার সঙ্গে। এই প্রসঙ্গে অহনা জানান-'উনি আমার মা, এবং ওঁনাকে আমি সম্মান করি। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না'। খানিকটা থেকে মিশকা যোগ করেন- ‘আমি জানি মানুষের মনে অনেকরকম প্রশ্ন উঠছে, তবে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হোক আমি চাই না। আমি চাই আমার কাজ নিয়ে লোকে কথা বলুক। প্রথম সিরিয়ালে আমি যে সাফল্য পেয়েছি সেটা নিয়ে আলোচনা হোক।' তবে ব্যক্তিগত জীবনের এই টানাপোড়েনে অনেকটাই অস্বস্তিতে অহনা।
ফ্যানেদের উদ্দেশে তিনি বলেন- 'আমি ওদের খুব ভালোবাসি। তাই ওরা যখন কিছু লেখে সেটা আমাকে এফেক্ট করে। আমি খুব হেলপলেস একটা পরিস্থিতিতে রয়েছি। যেগুলো বলতে চাই সেগুলো বলতে পারছি না। আমার শিক্ষাটা অন্যরকম, সেটা মা-ই আমাকে দিয়েছেন। আমি জানি কাদা ছুঁড়লে সেটা নিজের গায়েই লাগে, তাই আমি কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি চাই না। আমি জানি কাদা ছুঁড়লে সেটা নিজের গায়েই লাগে, তাই আমি কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি চাই না। তাই ফ্যানেদের বলব, ওরা যেন এগুলো মনে না রাখে। আমি ওদের ঠকাচ্ছি না। ওরা যেন আমাকে রিয়েল লাইফে ভিলেন না ভাবে, সেটা আমি নই’।
এই বিষয় নিয়ে অহনার মায়ের কী মন্তব্য? তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে স্পষ্টভাবে কিছুই বলতে চাননি তিনি। শুধু জানান, এই মুহূর্তে তাঁর কথা বলবার মতো মানসিক পরিস্থিতি নেই। আরেকটু সময় দরকার নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার।
সত্যি কি দীপঙ্করের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন অভিনেত্রী? সেই নিয়ে খোলাখুলি কথা বললেও চর্চিত প্রেমিককে নিয়ে মিথ্যা রটনায় প্রতিবাদী মিশকা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার রিলেশনশিপ স্টেটাস বা যাকে ঘিরে আমাকে নিয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে তাকে নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না। কারণ সে আমার পরিচিত, আমি তাকে খুব ভালো করে চিনি। আমার কাছে সে অত্যন্ত ভালো মানুষ। তার ব্যাপারে যে মন্তব্য করা হচ্ছে সেগুলো মিথ্যা। আমাদের কোনও সম্পর্ক রয়েছে, এটা আমি বলছি না। আমি ওই মানুষটা জেনুইন।’
তিনি আরও বলেন- 'দীপঙ্কর আমার অনেকদিনের পরিচিত আমি আগেই বললাম, যে মন্তব্যগুলো করা হচ্ছে সেটা ফেক। ছবি দেখে কখনও কিছু প্রমাণ হয় না। কিছু দেখে কিছু বিশ্বাস করা ভুল। যা ঘটে সবসময় দেখা যায় না। মানুষ বিচার করবে কে ঠিক, কে ভুল-- তবে আমার মায়ের বিরুদ্ধে আমি একটা মন্তব্যও করব না।'
অহনার জন্মদিনে সোশ্যালে কপল ছবি পোস্ট করে দীপঙ্কর লেখেন- ‘তুমি প্রত্যেক বছরেই আরও সুন্দর হোচ্ছ। জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা মাম্মা’। বিতর্কের জল গড়াতেই সেই ছবি মুছে ফেলেন দীপঙ্কর, ফেসবুক প্রোফাইলের সেটিং-ও বদলে ফেলেন।
ডান্স বাংলা ডান্স-এর মঞ্চে শুরু হয়েছিল অহনার সফর, সঙ্গী তাঁর মা চাঁদনি। নাচের মঞ্চে মা-মেয়ের যুগলবন্দি মুগ্ধ করেছিল গোটা বাংলাকে। শুধু নাচ নয়, অহনা ও তাঁর মা চাঁদনির লড়াইয়ের গল্পও চোখের কোণ ভিজিয়েছিল দর্শকদের। একা হাতে মেয়েকে বড় করেছেন চাঁদনি। মা-মেয়ের বন্ডিং বরাবরই নজর কেড়েছে সকলের। দ্রুত ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাক মা-মেয়ের, এমনটাই প্রার্থনা জুটির ভক্তদের।