সালটা ২০১৩ জিয়া খান আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তারপর কেটে গিয়েছে টানা ১০ বছর। অবশেষে নানান টালবাহানার পর গত শুক্রবার CBI-এর বিশেষ আদালত জিয়া খান আত্মহত্যা মামলায় বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে সূরজ পাঞ্চোলিকে। আর এরপরই হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন সূরজ। তাঁর কথায়, ‘বিগত এক দশক ধরে আমাদের পরিবারের উপর যা গিয়েছে তাতে আমি ক্লান্ত’।
সূরজকে প্রশ্ন করা হয়, জিয়া খান আত্মহত্যার মামলায় আদালত আপনাকে মুক্তি দিয়েছে, 'মুক্ত' শব্দটি আপনি কীভাবে অনুভব করছেন? উত্তরে সূরজ বলেন, 'আমাকে আদালতে যেতে হবে না, একথাটা আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার এখন বয়স ৩২, আর যখন আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়, তখন আমার বয়স ছিল ২১। আমার জীবনের ২০ কোটার সময় আমি পুরোটাই আদালতের চক্কর কেটেছি। অনেকের কাছেই রায়দানের এই দিনটি অন্যরকম, তবে আমার কাছে আলাদা কিছুই মনে হয়নি। কারণ, গত ১০ বছরের প্রতিটি সপ্তাহ আমি আদালতে বসে কাটিয়েছি।
আদালত তার রায়ে বলেছে ‘জিয়ার মানসিক অবসাদের সময় আপনিই তাঁকে সেই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেন’। একথায় সূরজ বলেন, ‘জিয়ার সবথেকে খারপ সময়ে ওঁর সঙ্গে একমাত্র আমিই ছিলাম। ওঁর পরিবার এখন ন্যায় বিচারের জন্য দৌড়াচ্ছে, যাঁরা ন্যায় বিচারের কথা বলছেন তাঁরা কিন্তু খারাপ সময়ে কেউ ওঁর সঙ্গে ছিলেন না। আমিই ওর পরিবারকে জানিয়েছিলাম জিয়া মানসিক অবসাদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমি তখন ওঁর জন্য যতটা পেরেছি করেছি। মনে করিয়ে দি, তখন কিন্তু আমার বয়স ছিল মাত্র ২০। আমি তখন নিজের যত্ন নিতেও সক্ষম ছিলাম না। তবে জিয়ার যত্ন নিতে যথাসাধ্য করেছি। কিন্তু শেষপর্যন্ত ওঁর পরিবারকেই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু জিয়ার মা কিংবা ওঁর পরিবার আর্থিক প্রয়োজনীয়তা ছাড়া, জিয়ার আর কোনও প্রয়োজনীয়তাই মেটাই নি।’
আরও পড়ুন-'তু চুপ কর' একথাই বলতেন অনুরাগ বসু, কঙ্গনা লিখলেন, 'তোমায় ভালোবাসি অনু'
সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই এই রায়…। এবিষয়ে সূরজের বক্তব্য, 'এই কথাটি শুধু আইনজীবী এবং বিচারকদের ব্যবহারের জন্যই একটি কথা। আসলে, প্রমাণের অভাব নয়, আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ নেই। প্রমাণের অভাব কথাটা সন্দেহজনক শোনায়।
সূরজ পাঞ্চোলি জানান, ‘গত ১০ বছরে তাঁর ও তাঁর পরিবারের জন্য একটা কঠিন সময় গিয়েছে। তিনি এবিষষয়ে আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চাইনি, কারণ আমার জন্য়ই ওদের খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। যদিও আমি পরিবার ছাড়া কারোর সঙ্গে বিশেষ কথা বলি না। আসলে কী জানেন তো, কাউকে অভিযুক্ত করা খুব সহজ, একমাত্র অভিযুক্ত ব্যক্তিই জানেন, সে সেই অভিযোগ সত্যি নয়।’ এই মামলার জন্য কাজ হারাতে হয়েছে সূরজকে। তাঁর কথায়, ‘অভিনেতা, ক্রিকেটারদের জন্য শুধু ভালো ধ্যানধারণা প্রয়োজন। মাত্র ২০ বছর বয়সেই আমাকে দানবের মতো ধ্যান-ধারণা তৈরি হয়েছে। গত ১০ বছর মিডিয়া ট্রায়াল চলেছে, যার উপর আমার কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সব প্রমাণ হতে দীর্ঘ ১০ বছর সময় লেগে গেল…’