মিঠাই থেকে সোজা বড় পর্দায় দেবের নায়িকা। সফরটা যে দুর্দান্ত সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু মিঠাই থেকে সৌমিতৃষা কীভাবে প্রধান ছবির রুমি হয়ে উঠেছিলেন? কেমন ছিল 'দেবদা'র সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা? প্রধান মুক্তির ঠিক আছে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানালেন অভিনেত্রী।
ছোট পর্দার পর এবার বড় পর্দা, প্রথম ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
সৌমিতৃষা: ভীষণই ভালো অভিজ্ঞতা। অতনুদা, অভিজিৎদা, দেবদা, পরাণ স্যার সহ যাঁরা যাঁরা এই ছবিতে আছেন তাঁরা প্রত্যেকে এত ভালো যে কী বলব। ওঁরা অনেকেই এর আগে একসঙ্গে কাজ করেছেন, কিন্তু আমি যে নতুন এই টিমে সেটা একেবারেই বুঝতে দেননি কেউ। সব থেকে বড় কথা, আমি সবার থেকে যে শ্রদ্ধা পেয়েছি সেটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে প্রথম ছবিতেই ওঁদের সঙ্গে কাজ করতে পারলাম। কতজনের এই সৌভাগ্য হয়?
সৌমিতৃষা কেমন সেটার আন্দাজ দর্শকদের আছে, কিন্তু রুমি কেমন মেয়ে?
সৌমিতৃষা: হেহে (হেসে নিয়ে), রুমি একজন নববিবাহিতা মেয়ে। ভীষণ শান্ত, ঠান্ডা মাথার মেয়ে একজন যার বর আবার দারুণ রাগী। ওদের দুজনের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হয়েছে, তারপর কীভাবে ওদের রসায়ন জমে ওঠে, ভালোবাসা জন্মায়, একে অন্যের পাশে থাকে সেটাই দেখাবে এই ছবি। তবে...
আরও পড়ুন: 'সবাই আমায় ছিঁড়ে ফেলত...' কাবুলিওয়ালা করার আগে কেন ভয় পেয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী?
আরও পড়ুন: ‘একেন বাবু’ করার আগে অনির্বাণ জানতেনই না এই চরিত্রর কথা! খোলামেলা আড্ডায় আর কী বললেন?
বলুন।
সৌমিতৃষা: একজন পুলিশ আগে দেশ এবং সমাজের, তারপর পরিবারের। এটা যদি একজন পুলিশের স্ত্রী না বোঝে সম্পর্কটাই নড়বড়ে হয়ে যায়। কিন্তু রুমি সেটা বোঝে। সম্পূর্ণ ব্যালেন্স করে চলে সে জীবনে। বরের আবার সাপোর্ট সিস্টেমও বটে। আমার চরিত্রের সঙ্গে নববিবাহিতা মেয়েরা ভীষণ রিলেট করতে পারবে। মনে হবে আরে এটাই তো আমি। আবার ছেলেরা দেবদার চরিত্র দেখে ভাববে আরে এটাই তো আমি।
মিঠাই দারুণ ছটফটে ছিল, রুমি ঠিক তার উল্টো। ধারাবাহিক শেষ হতে না হতেই এই পরিবর্তনটা আনলেন কীভাবে?
সৌমিতৃষা: মিঠাইয়ে আমি দুটো চরিত্র করলেও আমাদের পরিচালক রাজেন দা সবসময় বলতেন ‘তুই কিন্তু আদতে তিনটে চরিত্র করছিস’। আসলে প্রথমে মিঠাই ভীষণই ছটফটে ছিল। তারপর মিঠি এল, সে শিক্ষিত হলেও ছটফটে ছিল। পরে যখন আবার মিঠাই ফিরে আসে তখন সে কিন্তু শান্ত, ভীতু হয়ে ফিরে আসে। এখানে আবার রুমি একেবারেই শান্ত। অন্যরকমের। গোটা টিম খুব সাহায্য করেছে যাতে দুটো চরিত্রের মধ্যে ফারাক তৈরি করা যায়। আমি শুট তো বটেই তার বাইরেও চুপচাপ থাকতাম। কথা বলতাম না খুব একটা। ঠান্ডা থাকতাম চরিত্রের মতোই।
দেবের সঙ্গে প্রথম ছবিতেই কাজ, কী কী শিখলেন?
সৌমিতৃষা: সকলেই জানে উনি আমার কতটা পছন্দের হিরো। এত বছর কাজ করছেন, আমি তো প্রথম ভয় পেয়েছিলাম, ভাবছিলাম কিছু যদি ভুলচুক হয় কী বলবেন। কিন্তু পরে দেখলাম একেবারেই সেটা নয়। সেটে উনি আমার সহ অভিনেতাই। ওঁর উল্টো দিকে যে থাকত সবার সঙ্গেই হেসে ভালো করে কথা বলতেন। সবার দিকে নজর রাখতেন। আমরা এখন নতুন, আমরা এগুলো করি। কিন্তু উনি ১৭ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থেকেও নিজের শিকড় ভোলেননি। মাটিতে পা রেখে চলেন। এটাই শেখার। এটাই বোঝার যে নিজের অতীতটা ভুলো না।
মিঠাই হোক বা রুমি, সৌমিতৃষার জন্য ভক্তদের উন্মাদনা দেখার মতো। এটা কতটা এনজয় করেন?
সৌমিতৃষা: বিশ্বাস করো, আমি না মিউজিক লঞ্চের দিন অবাক হয়ে গিয়েছি যে বাংলাদেশ থেকে মানুষরা এসেছেন দেখা করতে। এত্ত ভালো লেগেছিল যে কী বলব। দেখো, অনেক সিরিয়াল তো হিট করে, শেষ হওয়ার পর সকলকে নতুন চরিত্রে দেখা যায়, আগেরটা ভুলে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে হয়নি। দর্শকরা আমার নতুন কাজের জন্য মুখিয়ে ছিল। কেউ নৈহাটির বড় মায়ের কাছে পুজোও দিয়েছে। কেউ আবার বলেছেন ‘আমি তো মুসলিম, পুজোও দিতে পারব না। আমি তোমার জন্য নামাজ পড়েছি।’ এগুলোই আমার পাওনা। আমার দর্শকরা যেন আমার সঙ্গে সঙ্গেই চলছে।
প্রথম ছবিতে বিশেষ কোনও অভিজ্ঞতা হল?
সৌমিতৃষা: সবটাই না খুব স্পেশাল। সারাজীবন মনে থাকার মতো। তবে একটা কথা বলি, আমি যখন ৬-৭ এ পড়তাম তখন দেবদা, জিতদার ছবি কেটে ডায়রিতে লাগিয়ে রাখতাম। সেদিন হঠাৎই একটা জায়গায় দেখলাম দেবদার সঙ্গে আমার ছবি। দুজনের পোস্টার। এটা যে কতটা ভালো লাগা বলে বোঝাতে পারব না।
আগামী পরিকল্পনা? ছোট পর্দায় ফিরবেন?
সৌমিতৃষা: এখনও ঠিক করিনি। আগে প্রধান মুক্তি পাক। তারপর দেখি কী অফার পাই, সেই মতো।