দেবলীনা কুমারআজ পিতৃদিবস। বাবাকে তাই খোলাচিঠি লিখতে বসেছি। জানাতে বসেছি, মানুষটাকে ঠিক কতটা ভালোবাসি। কিন্তু লিখব কী করে বুঝে উঠতে পারছি না। লিখতে গেলেই গলার ভিতর দলা পাকানো একটা কান্না যেন ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। চোখ আবছা হয়ে আসছে।
'বাবা', এই শব্দটাই আমার কাছে অন্য রকম একটা অনুভূতি। এক অপার বিশ্বাস আর ভরসার পৃথিবী যেন গুটিসুটি পাকিয়ে রয়েছে এই ছোট্ট শব্দটার ভিতরেই। আমার বাবা-ই আমার শক্তি। আবার ওই মানুষটাই আমার দুর্বলতা। বাবাকে ছাড়া আমার জীবনটাই অসম্পূর্ণ।
আমার আর বাবার মধ্যে অদ্ভুত একটা বোঝাপড়া রয়েছে। সারা জীবনের একে অপরের পাশে থেকে যাওয়ার এক অব্যক্ত চুক্তি যেন! বাবার কাছে কোনও কিছু চাইলে আমাকে না বলতে পারে না। একই ভাবে বাবাও আমার কাছে কোনও আবদার করলে আমি না বলতে পারব না। মানুষটাকে বাইরে থেকে খুব কঠোর মনে হলেও আসলে খুব আবেগপ্রবণ। আমি যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম, বাবার চোখে জল দেখেছিলাম। সেই দিনটা এখনও ছবির মতো মনে আছে।
বাবা কখনোই আমাকে কাছছাড়া করতে চায়নি। এমনকী আমার বিয়েও দিতে চাইত না। কিন্তু বুঝেছে, সেটা করলে চলে না। কিন্তু বিয়ের পরেও সপ্তাহে দু'দিন আমাকে বাবার কাছে এসে থাকতে হয়। একটু অনিয়ম হলেই তার চিন্তা! বাড়ি গেলেই প্রশ্ন, 'আজ থাকবে তো?'
এমন মানুষকে ছেড়ে কি সত্যিই থাকা যায়? বাবাকে ছেড়ে একটা মুহূর্তও আমার চলবে না। আমার অস্তিত্বের সবটা জুড়েই বাবা। আমি গর্বিত আমি দেবাশিস কুমারের মেয়ে।