জন্মসূত্রে ব্রিটিশ হলেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ফ্রান্সে। সেই দেশেই তিনি পরিচিতি পান, জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন, এবং অবশেষে মারা যান। কথা বলছি জেন বিরকিনের। ৭৬ বছর বয়সে এই ফরাসি অভিনেত্রী তথা আইকন প্রয়াত হলেন।
ফ্রেঞ্চ কালচার মিনিস্ট্রির তরফে তাঁর মৃত্যুর পর জানানো হয়েছে এই দেশ তাঁদের টাইমলেস ফ্রাঙ্কোফোন আইকনকে হারাল। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে জেন বিরকিনকে তাঁরই বাড়ি থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিনেত্রী তথা গায়িকার আত্মীয় পরিজনরা নাকি তেমনটাই জানিয়েছেন। ২০২১ সালে একটি মাইল্ড স্ট্রোক হয় বিরকিনের। তারপর থেকেই তিনি নানা রকম হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।
১৯৬৯ সালে মুক্তি পাওয়া সেই বিখ্যাত গানটির কথা মনে আছে? 'জে টেইম মই নন প্লাস...' বা সহজ ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করলে যার মানে দাঁড়ায় আই 'লাভ ইউ... মি নট এনিমোর।' এই গানটি সেই সালে মুক্তি পায়। গেয়েছিলেন তিনি এবং তাঁর তৎকালীন প্রেমিক তথা গায়ক এবং লিরিসিস্ট সার্জ গেইন্সবার্গ।
জেন বিরকিন একাধিক ছবিতে গান গাওয়া বা অভিনয় করার জন্য যেমন বিখ্যাত ছিলেন তেমনই তিনি জনপ্রিয় হয়েছিলেন তাঁর ভালো স্বভাবের জন্য। একই সঙ্গে তিনি LGBT গোষ্ঠীর হকের দাবি বহু লড়াই করেছিলেন। তাঁর অধিকারের জন্য সবসময় লড়ে গিয়েছেন।
তাঁর মৃত্যুতে প্যারিসের মেয়র অ্যানি হিদালগো জানিয়েছেন 'ইংরেজদের মধ্যে সবথেকে বেশি প্যারিসিয়ান যিনি ছিলেন তিনি আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আমরা কখনই তবে গাওয়া গান, তাঁর হাসি বা তাঁর কথা বলার ধরন কিছুই ভুলব না।'
১৯৪৬ সে জেন ম্যালোরি বিরকিন জন্মগ্রহণ করেন লন্ডনে। তিনি ব্রিটিশ অভিনেত্রী জুডি ক্যাম্পবেলি এবং সেই দেশের নৌসেনার কমান্ডার ডেভিড বিরকিনের কন্যা। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি প্রথমবার স্টেজে পারফর্ম করেন। এরপর ১৯৬৬ সালে মাইকেল্যাঞ্জেলো অ্যান্টোনিওনির ছবি ‘ব্লো আপে’ তাঁকে একটি যৌন দৃশ্যে দেখা যায়। পরবর্তীকালে যদিও তিনি ফ্রান্সে এসে বিখ্যাত হয়। তাঁর এবং গেইন্সবার্গের প্রেম হয়ে ওঠে চর্চার বিষয়। তাছাড়া তাঁর ব্রিটিশ উচ্চারণে ফ্রেঞ্চ বলার কায়দাও বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। ২০২০ জেন বিরকিনের শেষ অ্যালবাম মুক্তি পায়।
১৯৯১ সাল নাগাদ তাঁর হাত ধরেই ফ্রেঞ্চ লাক্সারি হাউজ হার্মিসের বিখ্যাত বিরকিন ব্যাগ জনপ্রিয় হয়।