কেরলে নৃংশভাবে এক গর্ভবতী হাতিকে মেরে ফেলার ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়।রাজ্যের বন বিভাগের অফিসার মোহন কৃষ্ণন সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নক্কারজনক ঘটনা প্রকাশ্যে আনেন। ঘটনা কেরলের মালাপ্পুরম জেলার।এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকেই সরব নেটিজেনরা। এই বর্বর ও নৃশংস ঘটনা ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিল মনুষ্যত্ব আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে! গর্ভবতী হাতির মৃত্যু ঘিরে প্রতিবাদী তারকারাও। পশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আরও কঠিন আইন দাবি করলেন টলিগঞ্জের কলাকুশলীরা।
এই ঘটনায় অগ্রণী ভূমিকা নিলেন পশুপ্রেমী মিমি। মঙ্গলবারই মিমি এই প্রসঙ্গে টুইট করেছিলেন,'এই বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না,আমি নির্বাক'।বুধবার দিনভর হাতি খুনের ঘটনা নিয়ে একাধিক টুইট করলেন যাদবপুরের সাংসদ। পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকরের উদ্দেশে মিমি লেখেন, কেরলের মন্দিরে কয়েক শো হাতিকে চেন দিয়ে বেঁধে রাখা হয় সারাজীবনের জন্য। ওঁদের ধীরে ধীরে ঢলে পড়া মৃত্যুর খবর কেউ জানতেও পারে না।…ভারতের ঐতিহ্য হাতি তাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকবার পূর্ন অধিকার রয়েছে,তাদের বাসভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে'।
মিমি আরও লেখেন, গতমাসেই কেরলের জঙ্গল থেকে সেফগার্ড সরিয়ে দেওয়া হয়,অধিকার দেওয়া হয় বন্য শুয়োর হত্যার। এখন বিষ দিয়ে,বাজি দিয়ে মানুষজন বন্য পশু মারছে ওখানে। সরকারের এই নীতিই ওই গর্ভবতী হাতির মৃত্যুর জন্য দায়ি,দাবি করলেন মিমি চক্রবর্তী।
পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় মর্মাহত এই ঘটনায়। তিনি টুইট করেন, আমরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার যোগ্য। সেই টুইট রিটুইট করেন অন্তঃসত্ত্বা শুভশ্রী। বলেন, একদম ঠিক।
পরিচালক রাজ চক্রবর্তী লেখেন, মানুষ হল আদতে শয়তান।হয়ত তার চেয়েও খারাপ কিছু। কবে থামবে এই জঘন্য ঘটনা? ভাবতেই পারছি না কীভাবে মানুষ বর্তমান পরিস্থিতিতেও এইসব কাণ্ড ঘটাচ্ছে। এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই আমরা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের কারণ হব। দোষীদের কঠিনতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি'।
এই ঘটনায় মন কাঁদছে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়,রুক্মিনী মৈত্র,পার্নো মিত্রদেরও।
জানা গিয়েছে বিস্ফোরণের জেরে শরীরের ভিতরে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল ওই হাতির। সেই অবস্থাতেই তীব্র যন্ত্রণায় বেশ কয়েকদিন গ্রামের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় হাতিটি,এরপর ভেল্লিয়ার নদীতে নেমে যায় যন্ত্রণা লাঘব হওয়ার আশায়। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই মৃত্যু হয় হাতিটির। হাতিটির অটপসি রিপোর্ট বলছে অন্তত দিন কুড়ি আগে আহত হয়েছিল হাতিটি। অর্থাত ঘটনাটি ঘটেছে মে মাসের শুরুর দিকে। এই দীর্ঘ সময় ধরে সহ্য যন্ত্রণা বয়ে বেরিয়েছে হাতিটি। এই গর্ভবতী হাতির নৃসংশ হত্যা ফের একবার দেশে অবলাদের সুরক্ষা নিয়ে বেশকিছু প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল।
পশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আরও কঠিন আইন দাবি করেছেন বলিউড তারকারাও।