ভারতীয় সিনেমার ডান্সিং দিভা, বা নৃত্য সম্রাজ্ঞী বলতে একজনকেই বোঝায়, আর তিনি হলেন হেলেন। ১৯৫০ থেকে ৬০ এর দশকের মধ্যে এমনকি পরবর্তী সময় মহাব্বতে ছবিতেও তাঁর নাচের ঝলকে মুগ্ধ হয়েছে গোটা দেশ। তবে ১৯৮০ সালে হেলেন তো বটেই সঙ্গে চিত্রনাট্য লেখক সেলিম খানের জীবন আমূল বদলে যায়। দুজনের জীবনই একটা বেশ বড় বাঁক নেয়। সেলিমের তখন ৪৫ বছর বয়স আর হেলেনের ৪২। সেলিমের তখন ভরা সংসার স্ত্রী-পুত্র নিয়ে। এমন সময় দুজনে প্রেমে পড়লেন। সব কিছুকে উপেক্ষা করে হাত ধরলেন একে অন্যের। এবার নিজেদের সম্পর্কের সেই শুরুর দিনগুলোর কথা প্রকাশ্যে তুলে আনলেন অভিনেত্রী। আরবাজ খানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন নানা অজানা কথা।
সেলিম খানের পরিবারের সঙ্গে হেলেনের ভীষণই ভালো সম্পর্ক। তবে আরবাজকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে তিনি জানান তাঁরা যখন বিয়ে করেন তখন সেই সময়টা সেলিম খানের প্রাক্তন স্ত্রী সালমা খানের জন্য ভীষণই কঠিন ছিল।
হেলেন জানান তিনি এবং সেলিম খান যখন প্রেম করছিলেন তখন সালমা খানকে অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। অনেক কিছুই সহ্য করতে হয় তাঁকে। ১৯৫৪ সালে সেলিম খান সুশীল চারক, বর্তমানে যিনি সালমা খান নামে পরিচিত তাঁকে বিয়ে করেন। সেটাও তাঁদের প্রেমেরই বিয়ে ছিল। এরপর তাঁদের তিন ছেলে, সলমন, আরবাজ এবং সোহেল খান এবং দুই মেয়ে আলভিরা এবং অর্পিতা খানের জন্ম হয়।
দ্য ইনভিনসিবল সিরিজের আগামী পর্বের নতুন টিজার প্রকাশ্যে এসেছে। বৃহস্পতিবার ১৭ ফেব্রুয়ারি এই টিজার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে, সেখানে আরবাজ খান হেলেনকে তাঁর কেরিয়ারের সেরা ডান্স নম্বর এবং কেন তিনি সিনে জগৎ থেকে সরে গেলেন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, 'আমি নিজেকে ধন্য মনে করি যে আমি ৪২ বছর বয়স পর্যন্ত সিনেমায় নাচ করতে পেরেছি। তখনকার দিনে মানুষ ভাবত, ছবিতে কাজ করা উচিত নয়। এটাই আমার ভবিতব্য ছিল।'
আরবাজ এরপর তাঁকে জিজ্ঞেস করেন তাঁর বাবার সঙ্গে কখন তাঁর আলাপ হয়। উত্তরে এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বলেন, 'ও আমায় একটা চরিত্র দিয়েছিল। আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম। তোমার মা খুব ভালো ছিলেন। তবে ওই সময়টা তাঁর জন্য ভীষণই কঠিন ছিল। ওকে অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে ওই সময়। তবে আমি বিশ্বাস করি আমার ভাগ্য আমাকে তোমাদের এত কাছে এনে দিয়েছে। আমি তার জন্য কৃতজ্ঞ। আমি কখনই চাইনি যে সেলিম ওর পরিবারের থেকে দূরে থাকুক।
১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে সেলিমের জন্য হেলেন বহু ছবিতে কাজ পেয়েছিলেন। একটার পর একটা প্রজেক্টে জমিয়ে কাজ করেন তখন হেলেন। আর এই প্রফেশনাল জীবনের বন্ডিংটাই ওঁদের ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছিল, সেটাকে আরও মজবুত করে তুলেছিল।
১৯৯০ সালের ফিল্মফেয়ারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সলমন জানিয়েছিলেন যে তাঁর বাবা যখন দ্বিতীয় বিয়ে করেন তখন তাঁর মা ভীষণই আঘাত পেয়েছিলেন। অনেক কিছু সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হেলেন আন্টি তাঁদের পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছিলেন বলেও জানান তিনি।