দিন কয়েক আগেই হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন কবীর সুমন। গানওয়ালার অসুস্থতার খবরে স্বাভাবিকভাবেই মনখারাপ ছিল ভক্তদর। ২৯ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। সঙ্গীতশিল্পীর অসুস্থতার খবরে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল অনুরাগীদের। বুকে সংক্রমণ এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। সব সমস্যা কাটিয়ে আবারও ফিরে এসেছে বছর চুয়াত্তরের কিংবদন্তি শিল্পী।
গায়কের হার্ট ফেলিওরের কারণ হিসেবে রটেছিল নানা রটনাও। প্রশ্ন উঠেছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে, রোজকারের অভ্যাস এমনকি 'চরিত্র' নিয়েও নানা মন্তব্য় করেছেন নিন্দুকেরা। বাড়ি ফিরেই সেই সব সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন কবীর সুমন। দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে রীতিমতো বোমা ফাটালেন তিনি। আরও পড়ুন: করণের সিনেমার শ্যুটিং করছেন ইব্রাহিম-খুশি, ‘সরজমিন’-এর সেট থেকে ভাইরাল ভিডিয়ো
কবীর সুমন লিখেছেন, ‘দীর্ঘকাল বেঁচে থেকে বুঝলাম বড্ড বেশিরভাগ বঙ্গভাষী বিশ্বাস করেন চরিত্র থাকে জননেন্দ্রিয়ে। কোনও পুরুষ একাধিক মহিলার সঙ্গে শয়ন করলেই তার চরিত্র খারাপ। মহিলাদের বেলাতেও একই মাপকাঠি। বড্ড বেশি বঙ্গভাষী আমায় ঘৃণা করেন আমি একাধিক মহিলার সঙ্গে থেকেছি বলে। বুঝেছি মূল জায়গাটা ঈর্ষা। তারাও চায়। পায় না। পেরে ওঠে না। তাই’।
এখানেই থেমে থাকেননি গানওয়ালা। সব তিরস্কার, কুমন্তব্যের জবাব দিয়ে এ দিন তিনি লেখেন, ‘সেদিন দেখলাম তিনজন সনাতনধর্মীয় বঙ্গজ পুরুষনামধারী ফেসবুকে লিখেছেন – হাসপাতাল থেকে না ফিরলেই ভাল হত। আবার কতজনকে ধরেবেঁধে বিয়ে করবে কে জানে। হাসপাতাল থেকে ফিরে এসেছি – বড়ই পরিতাপের বিষয়। যাঁরা তা মনে করেন প্লিজ আশায় থাকুন। বুড়ো আবার ব্যামোয় পড়বে। কে বলতে পারে এবারে হয়তো পগার পার’।
সুমনের কথায়, ‘আমার হাসপাতালে থাকার সময়ে কত মানুষ যে আমার আরোগ্য কামনা করেছেন, মায় যে যার ধর্মমতে প্রার্থনা করেছেন, মানত করেছেন, আমি অনুমান করতে পারি। অনেকেই রোজ কলকাতা মেডিকাল কলেজে গিয়ে বসে থাকছিলেন। আমি ছিলাম ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে অন্যান্য মরণাপন্ন রুগীদের সঙ্গে। সেখানে ইচ্ছে মতো দেখা করা সম্ভব নয়।’
হাসপাতাল থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা ছিল বলেই বর্ষীয়ান শিল্পীকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। শিল্পীর ফুসফুসে জল জমেছিল। হাসপাতালে থাকাকালীনই তা বের করে দেওয়া হয়। আপাতত বাড়িতেই বিশ্রামে থাকার নির্দেশ রয়েছে। চলছে নানা ওষুধও। কবীর সুমন বাড়িতে ফিরলেও চিকিৎসকদের মেডিক্যাল বোর্ড শিল্পীর শরীরস্বাস্থ্য নিয়মিত রাখছেন পর্যবেক্ষণে। বেশ অসুস্থই হয়ে পড়েছিলেন সুমন। শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছিল তাঁর। বাইরে থেকে অক্সিজেনও সরবরাহ করতে হয় তাঁকে। গায়ককে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
হাসপাতালে এক রাত কাটিয়েই ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন তিনি নিজের অনুরাগীদের উদ্দেশে। লিখেছিলেন, ‘শ্বাসকষ্ট নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছি। শিগগিরি সেরে উঠব। চিন্তা করবেন না।’