বিএমসির তরফে বুধবার ভেঙে দেওয়া হয়েছে কঙ্গনা রানাওয়াতের পালি হিলস স্থিত অফিস বাড়ির প্রায় ৪০ শতাংশ অংশ। এই বাড়ির নির্মাণে কাঠামোগত নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে এই অভিযোগ এনে মাত্র চব্বিশ ঘন্টার নোটিশে ভেঙে দেওয়া হয় কঙ্গনার এই বাড়ি। খবর, প্রায় ২ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি বুধবার ভেঙেচুরে দিয়েছে বৃহন্মুম্বই কর্পোরেশন। হাইকোর্ট তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে জানিয়ে বিএমসির এই নির্নয় ‘খারাপ উদ্দেশ্য’ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাত্র চব্বিশ ঘন্টার নোটিশেই কেন সম্পত্তি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে বম্বে হাইকোর্ট। নিজেদের হলফনামায় বিএমসির দাবি সব কাজ করা হয়েছে নিয়ম মেনে।
বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এইদিনই নিজের স্বপ্নের অফিসের ধ্বংস স্তূপ ঘুরে দেখেন কঙ্গনা। যা দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নায়িকা। তবুও ভেঙে পড়েননি তিনি। বরং গর্জে উঠে টুইটারে লিখলেন, এই অফিসের ধ্বংসস্তূপ তিনি সরাবেন না। বরং সেই ধ্বংসস্তূপে বসেই কাজ করবেন। কেন?
‘ আমি ১৫ জানুয়ারি আমার এই অফিসের সূচনা করি। এর কয়েক দিনের মধ্যে করোনা আমাদের সকলের জীবনে আছড়ে পড়ে। অনেকের মতোই আমার হাতেও এই সময়ে কোনও কাজ নেই, তাই আমার পয়সা নেই এর পুর্নিমাণের জন্য। আমি এই ধ্বংসস্তূপে বসেই কাজ করব। ছারখার হওয়া এই অফিসটা থাকবে এক জন নারীর প্রতিবাদের প্রতীক চিহ্ন রূপে। যে এই দুনিয়াতে শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চেয়েছিল’,টুইটারের দেওয়ালে লিখলেন কঙ্গনা।
সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে মুম্বই পুলিশ ও মহারাষ্ট্র সরকারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কঙ্গনা। সেই থেকেই টুইটারে শুরু কঙ্গনার সঙ্গে শিবসেনা নেতাদের বাকযুদ্ধ। অভিনেত্রীকে মুম্বই না ফেরবার পরামর্শ দিয়েছিলেন রাজ্যের স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীও। মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দলের বিধায়ক, সাংসদদের হুমকির তোয়াক্কা না করে জোর গলায় ৯ সেপ্টেম্বর মুম্বই ফেরার কথা ঘোষণা করেন কঙ্গনা। কিন্তু তার আগেই মাত্র চব্বিশ ঘন্টার নোটিশে বৃহন্মুমই পুরসভার তরফে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কঙ্গনার অফিস বাড়ি। এই পিছড়ে মহারাষ্ট্র সরকারের ষড়যন্ত্রই লুকিয়ে আছে বলে দাবি বিরোধী দল সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় অংশের।
সরকারের বিরোধিতা করাতেই এই চরম মূল্য চোকাতে হল কঙ্গনাকে, বক্তব্য তাঁদের। দেশের নানানস্থানে কঙ্গনার সমর্থনে এগিয়ে আসছে দেশের যুব শক্তি। মনিকর্ণিকা ফিল্মসের অফিসে কোনওরকম বেআইনি নির্মান ছিল না দাবি করেছেন কঙ্গনা। যে মনিকর্ণিকা ফিল্মসের অফিস কঙ্গনার কাছে মন্দিরের চেয়ে কম ছিল তা ভেঙে ফেলবার এই প্রয়াসকে বাবার বাহিনীর হাতে রাম মন্দির ভাঙবার সঙ্গে তুলনা করে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন উদ্ধব ঠাকরেকে। একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেন,'উদ্ধব ঠাকরে তোর কী মনে হয়.. তুই ফিল্ম মাফিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমার ঘর ভেঙে আমার থেকে প্রতিশোধ নিলি? সময়ের চাকা ঘুরবে। তুই আজ আমার ঘর ভেঙেছিস, কাল তোর অহংকার ভাঙবে..'।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীকে তুই বলে সম্বোধন করায় কঙ্গনার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বিক্রোলি থানায়।