৭ জুলাই, ৬০-এ পা দিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়। অর্থাৎ এবার থেকে তিনি 'সিনিয়ার সিটিজেন'। জন্মদিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানান কথা খোলসা করেছেন খরাজ। পরিবার কি তাঁর জীবনের এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করেন? এই প্রশ্নে অভিনেতা জানিয়েছেন, বাড়ির সকলে এই দিনটিতে তাঁকে কোনও কাজ না রাখার কথা বলেন, যদিও প্রত্যেকবার সেই দাবি মানা তাঁর পক্ষ সম্ভব হয় না।
জন্মদিনে আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জন্মদিনে স্মৃতির পাতা উল্টে দেখেন খরাজ। জানিয়েছেন, একসময় তাঁর বাবা এক্কেবারেই চাননি, তাঁর ছেলে অভিনয়কে পেশা করুক। কারণ, এটা ভীষণই অনিশ্চিত একটা পেশা। অনেকেই হয়ত জানেন না, কেরিয়ারে শুরুর দিকে খরাজ মুখোপাধ্যায়ও একসময় রেলে চাকরি করতেন। সেসময় চাকরির ফাঁকেই টুকটাক অভিনয় করতেন তিনি। তবে তাতে অফিসের ক্ষতি হত, যা নিয়ে অনুশোচনায় ভুগতেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। মনে হত, একটা সরকারি আসন দখল করে রাখার অধিকার তাঁর নেই। তাঁর এই মনের কথা অকপটে জানিয়েছিলেন স্ত্রী প্রতিভাকে। এক্ষেত্রে প্রতিভা মুখোপাধ্যায়ও স্বামীর পাশেই ছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিনেতা। বলেছিলেন, ‘যেটা মন চাইছে করো।’
আরও পড়ুন-বক্স অফিসে কার্তিক-কিয়ারার ‘সত্যপ্রেম কি কথা’র হালচাল কেমন? ৮ দিনে আয় কত হল?
আরও পড়ুন-মাতৃহারা মিঠুন চক্রবর্তী, মুম্বইতে প্রয়াত অভিনেতার মা শান্তিরানি চক্রবর্তী
অভিনয় ছাড়াও এই কাজের সুবাদেই বিভিন্ন শিল্পীর হয়ে ডাবিং করেন খরাজ। অবলীলায় অন্যের মিমিক্রি করতে পারেন তিনি। এপ্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন, গান শেখার সময় যেমন সুর, তাল, সবকিছু খেয়াল রাখতে হয়, তাঁর কাছে মিমিক্রি বিষয়টাও তাই। তবে জানিয়েছেন, একবার মমতা শঙ্করের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে রঞ্জিৎ মল্লিকের সামনেই তাঁর অনুরোধে তাঁর স্বর নকল করেছিলেন। খরাজ মুখোপাধ্যায় জানান, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবি ঘোষের মতো অভিনেতারা তাঁর অনুপ্রেরণা।
কেরিয়ারে শুরুর দিকে বেশ রোগা ছিলেন অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়। তবে অভিনেতা জানান, একবার মারাত্মক এক দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। তারপর দীর্ঘদিন বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন, যেকারণে মোটা হয়ে যান। চিকিৎসকরা বলেছিলেন খুব বেশি শরীরচর্চা তিনি করতে পারবেন না। তবে তাঁর কথায়, তাঁর এই চেহারাই তাঁর কাছে শাপে বর হয়েছে। মোটা হওয়ার কারণেই আগের থেকে বেশি কাজ পেয়েছেন তিনি।
খরাজ মুখোপাধ্যায়ের রান্নার প্রশংসা করেন অনেকেই। অভিনেতা জানান, বাড়িতে থাকলে তিনি নিয়মিত রান্না করেন। বলেন, তাঁর ছেলে তাঁর হাতের মাংস, স্ত্রী মাছ, আর বউমা তাঁর রান্না সবজি খেতে পছন্দ করেন। এছড়া বন্ধুরাও কখনও তাঁর বানানো চচ্চড়ি, নুুডুলস খেতে পছন্দ করেন।
খরাজ মুখোপাধ্যায় জানান, সুযোগ পেলে তাঁর মাঝে মধ্যেই বীরভূমের পাথাইয়ের বাড়িতে গিয়ে থাকতে ভালো লাগে। তাঁর দেশের বাড়িতে রাধা-কৃষ্ণের মন্দির আছে। দোল উৎসব হয়। তাঁর আর তাঁর স্ত্রী ইচ্ছা অবসরের পর গ্রামের বাড়িতেই চলে যাবেন। কুঁতিয়ে কুঁতিয়ে সারাজীবন রোজগার করে যেতে হবে, এমন বাসনা তাঁদের নেই।