ভারতের বিখ্যাত স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান কুণাল কামরা তথ্য ও প্রযুক্তি আইন ২০২১ (ইন্টারমিডিয়ারি গাইডলাইনস অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) -এর সাম্প্রতিক সংশোধনকে চ্যালেঞ্জ করলেন। বম্বে হাইকোর্টে তিনি এই বিষয়ে একটি আবেদন করেছেন।
এই সংশোধিত আইনের ৩ নম্বর নিয়ম কেন্দ্রীয় সরকারের মিনিস্ট্রি অব ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজিকে একটি ফ্যাক্ট চেকিং বডি গঠন করার অনুমতি দেয় যা কিনা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া কোনও তথ্যকে মিথ্যা বা ভুয়ো বলে মান্যতা দিতে পারে নিজের বিবেচনা অনুযায়ী। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও কাজ সম্পর্কে পোস্ট হওয়া তথ্যকে তাঁরা তাঁদের বিবেচনা অনুযায়ী ভুয়ো বা মিথ্যা বলতে পারে।
এবং কেন্দ্রীয় সরকারের এই ফ্যাক্ট চেকিং কমিটির তরফে এমন কিছু চিহ্নিত করা হলে তৎক্ষণাৎ সেই টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারকে বা সেই নির্দিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়াটিকে এটার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি সেটা না হয় তাহলে তাঁরা আইটি আইনের ৭৯ ধারার নিরাপদ আশ্রয়ের সুরক্ষা হারাবে। আর কুণাল কামরা এই সংশোধিত আইনকে চ্যালেঞ্জ করেই আদালতে গিয়েছেন।
কুণাল কামরার আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি জিএস প্যাটেল এবং নীলা গোখলের একটি ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাব দিতে বলেছে যে এই সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কোন বাস্তব পটভূমি বা যুক্তি আছে কিনা। এই ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, 'কোন পটভূমি বা যুক্তি আছে কি যার কারণে এই সংশোধনের প্রয়োজন ছিল? আবেদনকারী এই সংশোধনীর কারণে কিছু ধরণের প্রভাবের প্রত্যাশা করছেন'। এই মামলার আগামী শুনানি 21 এপ্রিল হবে।
কুণাল তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন আইটি আইনের ধারা ৩(i)(II)(A), (C) আইটি আইনের ৭৯ ধারাকে এবং সংবিধানের ১৪ এবং ১৯(১)(a) এবং (g) কে মানছে না। সেটার নিয়মবিরুদ্ধ। তিনি তাঁর আবেদনে বলেছেন, 'আমাদের ভাবনা, অনুভূতি এবং বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যায় এই আইন যেমনটা আমাদের সংবিধানের অন্যতম পিলার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে।'
নাভরোজ সিরভাই যিনি কুণালের হয়ে এই মামলা লড়ছেন তিনি বলেন এই সংশোধনী আইন আমাদের সংবিধানের আর্টিকেল ১৯-কে খর্ব করে যা আমাদের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। তিনি আরও বলেন কোন খবর মিথ্যা বা ভুয়ো সেটা সরকার ঠিক করতে পারে না। নিজের কেসে নিজে কী করে ঠিক ভুল বিচার করবে সরকার? এতে স্বাভাবিক বিচারের যে নিয়ম সেটাকে লঙ্ঘিত করা হবে।
তিনি জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ার নিজস্ব নিয়ম আছে ভুয়ো খবর চিহ্নিত করার জন্য। যাঁদের কেরিয়ারের অনেকটাই সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভর করে এই নিয়মের কারণে তাঁদের সুরক্ষা বিঘ্নিত হবে।
কোর্টের তরফে এখনও কোনও অন্তর্বর্তী আদেশ দেওয়া হয়নি কিন্তু সরকারের তরফে জবাব চেয়েছে। আগামী ২১ এপ্রিল এই মামলার শুনানি হবে।