পরনে হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি, পায়ে সাদা রঙা চটি। উঁচু করে বাঁধা চুল। এটাই এখন সায়নী ঘোষের নির্বাচনী ক্যাম্পেনের লুক। পায়ে হেঁটে দিনভর জনসংযোগে ব্যস্ত তৃণমূলের সায়নী ঘোষ। ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মিমির উত্তরসূরী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাজি তিনি। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়বেন।
একদা বামমনস্ক হিসাবে পরিচিত সায়নী ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতার ঘাসফুলে শামিল হন। এরপর কেটেছে প্রায় তিন বছর। সেভাবে রুপোলি দুনিয়ায় দেখা মেলেনি সায়নীর। বলা যায়, আদা-জল থেকে রাজনীতির ময়দানে পড়েছিলেন অভিনেত্রী, প্রত্যাশিতভাবেই তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন। হাতে আর বেশি সময় নেই, নির্বাচনী নির্ঘন্ট জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সপ্তম দফায় ভোট হবে বাংলায়, শেষ দফা অর্থাৎ ১লা জুন যাদবপুরের মানুষ ভোট দেবেন।
রবিবার সকাল সকাল ছাতুর শরবত খেয়েই প্রচারে নেমে পড়েন সায়নী। নাওয়া-খাওয়া ভুলেই চলছে প্রচার কাজ। কিন্তু শরীরের দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে তাই স্বাস্থ্যকর খাবার ছাতুতেই এখন ভরসা রাখছেন সায়নী। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ‘ছাতুর শরবতে পুষ্টিগুণও রয়েছে, আবার পেটও অনেকক্ষণ ভরা থাকে।’ প্রচারের ব্যস্ততার জন্য আজকাল রোজ ভাত পেটে পড়ে না।
এদিন আজাদগড়ে প্রচারে নেমে রথ দেখা আর কলা বেচা দুটোই সারলেন। বাজারে গিয়ে দর-দাম করে সবজি কিনলেন। লালশাখ, ফুলকপি থেকে আরও কত্ত কী! মাসখানেক আগেই মা-কে হারিয়েছেন সায়নী। মেয়ে সারাদিন কাজে ব্যস্ত থাকায় অসুবিধায় পড়ছেন সায়নীর বাবা। এদিন তাই বাবার জন্য একটু বাজার করলেন সায়নী।
মায়ের কথা মনে করে এখনও আবেগঘন সায়নী। আনন্দবাজারকে জানান, ‘মা চাইত মেয়ে সাংসদ হবে, মা যদি আমায় ভোট দিতে পারত’। তারকারা সাংসদের টিকিট পেয়েও লোকসভায় পদধূলি দেন না, এমন নজির কম নেই। তবে সেই পথে হাঁটবেন না সায়নী, আশ্বাস তাঁর।
শেষলগ্নে এসে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন মিমি, জানিয়েছেন দলে থেকে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে সায়নীর সাফ কথা,'বাইরে থেকে দলের সমস্যার সমাধান হয় না। সমস্যা সব দলেই আছে। মিমির সমস্যা হয়েছে, মিমি বলেছে। আমি বাইরে দল নিয়ে অভিযোগ করব না।'
সায়নী বিধানসভা ভোটে আসানসোল থেকে লড়ে হারের মুখ দেখেন। তবুও সায়নীতে আস্থা হারাননি মমতা-অভিষেক। এবার আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অভিনেত্রী। সায়নীর বিরুদ্ধে বামেদের প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। বিজেপির হয়ে ময়দানে নামছেন অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়।