শামির আগুন বোলিং-এ ভর দিতেই বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত! শামি-ম্যাজিকে বুঁদ গোটা দেশ। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ৭ উইকেট নিয়ে দলকে রূদ্ধশ্বাস জয় এনে দিলেন এই পেসার। নিঃসন্দেহে আজকের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ তিনি। নিজের দক্ষতায় শততম এক একদিবসীয় ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখলেন মহম্মদ শামি।
এদিন মাত্র ৫৭ রান খরচ করে ৭ উইকেট নিলেন শামি। ভারতের প্রথম বোলার হিসাবে বিশ্বকাপের এক ম্যাচে এত বেশি সংখ্যক উইকেট নেওয়ার নজির গড়লেন, সঙ্গে ঝুলিতে এল অসংখ্য মাইলস্টোন। ফেসবুক, এক্সে চলছে শামি বন্দনা। এর মাঝেই সোশ্যালে শামিকে নিয়ে কলম ধরলেন সঙ্গীতশিল্পী সৌম্য চক্রবর্তী। রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চের অতি পরিচিত নাম সৌম্য। সারেগামাপা- বাংলার বিজয়ী সৌম্য এদিন দুনিয়াকে শোনালেন শামির কঠিন লড়াইয়ের কথা।শামির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহানের দাম্পত্য কলহের কথা কারুর অজানা নয়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই জানালেন কোর্টের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো শামির দেশের হিরো হওয়ার লড়াইটা সহজ ছিল না।
সৌম্য লেখেন, ‘চোখের সামনে তোমাকেও মিথ্যে মামলায় আলিপুর কোর্টে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি…. মিথ্যে ধর্ষনের মামলায় !!! লড়াই এটাকেই বলে ….. বাঘের বাচ্চা। তোমাকেও একই জায়গায় দাঁড়িয়ে লড়াই করতে দেখে শিখেছি প্রণাম তোমায় মহম্মদ শামী’ (লেখা ও বানান অপরিবর্তিত)। সৌম্য ‘তোমাকেও’ লেখেন কারণ, একটা সময় ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী নিজেও। ২০১৯ সালে রবীন্দ্রভারতীর এক যুবতীর আনা ‘মিথ্যা ধর্ষণ’ মামলায় গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। যদিও নিজেকে বরাবর বেকসুর বলেই দাবি করেছিলেন সৌম্য, এখন নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে সেই মামলা। শামির প্রতি তাই সহমর্মী তিনি।
শামির বিরুদ্ধে গার্হ্যস্থ হিংসা, বৈবাহিক ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন হাসিন জাহান। আপতত জামিনে মুক্ত শামি। আইনি লড়াই জারি রয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনের এই ঝড়ের জেরে একটা সময় আবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন শামি। তবে ঘুরে দাঁড়াতে শিখেছেন শামি। একবার রোহিত শর্মার সঙ্গে ইনস্টাগ্রাম লাইভে এসে শামি বলেছিলেন, তিনবার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন তিনি। শামি বলেছিলেন, ‘যখন ২০১৫ বিশ্বকাপে চোট পাই, তার পরে সম্পূর্ণ ফিট হতে ১৮ মাস সময় লেগেছিল। এটাই ছিল আমার জীবনের সবথেকে যন্ত্রণার অধ্যায়। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক সময় ছিল। যখন আমি পুনরায় খেলা শুরু করি, তখনই কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার উদয় হয়। আমি মনে করি, সেই সময় যদি পরিবার পাশে না থাকত, আমি এটা কাটিয়ে উঠতে পারতাম না। তিন বার আমি আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলাম।’
হাসিনের নাম নেননি পেসার, তবে তাঁর ইশারা যে দাম্পত্য জীবনের সমস্যাই ছিল, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারুর। এদিন ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচ ছাড়েন শামি, কিছু সময়ের জন্য দেশবাসীর চোখে ‘ভিলেন’ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে বল হাতে নিজের ভুল শুধরে নেন। কেন উইলিয়ামসনকে সাজঘরে ফিরিয়ে নিউজিল্য়ান্ডের ব্যাটিং-এর মেরুদণ্ড ভাঙেন। বাকিটা ইতিহাস।
এ বারের বিশ্বকাপের প্রথম চারটি ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার প্রথম একাদশে জায়গা পাননি শামি। হার্দিকের চোট শাপে বর হয় শামির। দলে সুযোগ পেয়ে আর পিছনে ফিরে তাকাননি। এখনও পর্যন্ত ২০২৩-এর বিশ্বকাপে মোট ২৩টি উইকেট শিকার করে এক নম্বরে রয়েছেন ভারতের এই তারকা পেসার।