বাংলার পরিচালকদের মধ্যে নিসন্দেহে বর্তমানে প্রথম সারিতে আসে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নাম। তাঁর পুজো রিলিজ ‘দশম অবতার’ ফাটিয়ে ব্যবসা করেছে সিনেমা হলে। শুধু তাই নয়, ২০২৩-এর পুজোতে যে চারটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল, আয় সর্বাধিক ছিল সৃজিতের সিনেমারি। টেক্কা দিয়ে গিয়েছিল দেবের বাঘাযতীনকেও। এবার কি তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বায়োপিক আনবেন তিনি, তাও লোকসভা ভোটের আগে?
বাংলার রাজনীতিতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম লেখা থাকবে সোনালি অক্ষরে। ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ কথাটা হয়তো খাপ খায় তাঁর সঙ্গেই। নিজে একটি দল শুধু বানননি, সেই দল নিয়ে লড়াই করে বামেদের ৩৪ বছরের রাজত্ব ভেঙে বসেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে। তাঁর অনেক অনুরাগীই তাঁকে এখন দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে তাই রয়েছে বিশেষ নজর সব দলের।
আরও পড়ুন: ১০০ কোটি আয়! ‘দাদা বউদি বিরিয়ানি’ দোকানের আয় শুনে দাদাগিরিতে চোখ কপালে সৌরভের
সত্যিই কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বায়োপিক বানাচ্ছেন সৃজিত? পরিচালক সেকথা খোলসা করে না বললেও শিবম দাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলতে শোনা যায়, মমতার জীবন নিয়ে খুব ভালো সিনেমা হবে। সৃজিতের কথায়, তিনি শুধু নিজের ভালো লাগার জন্য সিনেমা বানাই। কারণ একেক দর্শকের পছন্দ একেকরকমের। ছোটবেলা থেকে যেগুলো পড়ে এসেছেন, সেই ভালোলাগার জায়গাগুলোকে ফুটিয়ে তোলেন সিনেমার পর্দায়। ফেলুদা পড়তে ভালো লাগত তাই বানিয়েছেন দার্জিলিং জমজমাট-ছিন্নমস্তার অভিশাপ। বানিয়েছেন মিশর রহস্য, কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন। জুলিয়েট-সিজারকে ফুটিয়ে তুলেছেন জুলফিকারে। ছোটবেলার ভালোলাগার উদযাপনেই তাঁর সিনেমা বানানো।
আর এরপরই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বায়োপিকের কথা উঠলে, সৃজিত বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। সঙ্গে জ্যোতি বসুরও নাম নেন তিনি, উঠে আসে চারু মজুমদারের নামও। সঙ্গে স্বগোক্তি করে বলেন, বায়োপিক বানানোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, ছবিতে সব সত্যি দেখানো যায় না। কিছু অধ্যায় চেপে যেতে হয়।
আরও পড়ুন: ‘হালকা মেকআপ করেছি শুধু…’, লাল ঠোঁট, গ্লিটারি চোখ,বিয়েবাড়িতে জমিয়ে সাজ নন্দিনীর
তবে খুব জলদি মৃণাল সেনের বায়োপিক আনবেন পর্দায় সৃজিত মুখোপাধ্যায়। সেই কথাও এল পরিচালকের মুখে। বললেন, ‘আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে কুণাল দা, মৃণাল সেনের ছেলে আমাকে বলেছে যে উনি খুব বিখ্যাত মানুষ ছিল ঠিকই কিন্তু ওঁকে ভগবান বানিও না। তোমার যদি পড়ে মনে হয় ওঁর কোনও কিছু খারাপ ছিল সেটাও দেখিও। আমি তাই করেছি আমার ছবিতে। এই স্বাধীনতাটা আমি উপভোগ করেছি।’
আরও পড়ুন: ‘বউয়ের নামে না মামলা করে…’,সিপিএমের সায়নকে বিয়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে কটাক্ষ রাজন্যার
সবশেষে সৃজিত জানান, তিনি নিজের সিনেমা বানানোর সময়ে এমন পরিবেশ চান, যেখানে শেষ বক্তব্য থাকবে তাঁরই। কেউ নাক গলাবে না, স্ক্রিপ্টে কী থাকবে বা না থাকবে। আর তাই বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতার বায়োপিক বানানোর অফার তাঁর কাছে এলেও, হাতে নেননি।