সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার তদন্তে নেমে অভিনেতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা প্রাক্তন পিআর ম্যানেজার রোহিনী আইয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করল মুম্বই পুলিশ। সোমবার বান্দ্রা পুলিশ থানায় ম্যারাথন জেরা করা হয় রোহিনীকে। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ থানায় হাজিরা দেন রোহিনী। দীর্ঘসময় ধরেই চলে এই জিজ্ঞাসাবাদ। এদিন সুশান্ত সিং রাজপুতের আরও এক অ্যাসোসিয়েটকে জেরা করে মুম্বই পুলিশ,তবে তাঁর পরিচয় সম্পর্কে কোনও তথ্য পাওয়া জায়নি,খবর মুম্বই মিরর সূত্রে।
সুশান্তের মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্ট লেখেন রোহিনী। যেখানে বলিউডের একাংশের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন এই পাবলিস্ট। পুলিশের সঙ্গে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য না মিললেও জানা গিয়েছে পুলিশ রোহিনীর কাছ থেকে সুশান্তের ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্ক নিয়েই অধিক প্রশ্ন রেখেছিল। গত ১৪ জুন সুশান্ত সিং রাজপুতের বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ।
সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার মামলায় ইতিমধ্যেই প্রায় ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মুম্বই পুলিশ। আত্মহত্যার দশদিন আগে যে সকল ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন সুশান্ত সকলের বয়ানই রেকর্ড করা হবে। সুশান্তের চিকিত্সকদের বয়ানও রেকর্ড করবে মুম্বই পুলিশ।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বেশ কিছু সেলেব্রিটির অভিনেতাকে নিয়ে দেখানো ভুয়ো ভালোবাসা নিয়ে ইনস্টা পোস্টে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন রোহিনী। দুটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে চ্যাঁচাছোলা ভাষায় একদিকে যেমন বলিউডকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি, তেমনই রোহিনী সাফ জানিয়ে দিলেন ইন্ডাস্ট্রি লবিবাজির পরোয়া সুশান্ত কোনোদিনও করেনি।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোনও ক্যাম্পের তোয়াক্কা কোনওদিন সুশান্ত করতেন না। কোনও লববাজি মধ্যেও পড়তেন না। সুশান্তের একটি নিজের জগত ছিল। সেই জগতটা ছিল সূর্যের মতো বড়। তাই কোনওদিন কোনও সিনেমা কিংবা বলিউডের বিভিন্ন ক্যাম্পের রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। এবার এমনই মন্তব্য করলেন রোহিনী।
তিনি লেখেন, '…. যখনই সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ যাচ্ছে,ওকে নিয়ে কোনও না কোনও খবর। আর সেখানে দেখছি কিছু ফেরিওয়ালা নিজেদের অ্যাজেন্ডার প্রচার চালাচ্ছে,নিজের উদ্দেশ্য সফল করতে চাইছে। প্রত্যেক ব্যক্তি যাঁরা প্রচারের আলোয় আসতে চায়,তাঁদের ওর জীবন নিয়ে কোনও মন্তব্য আছে। বিশ্বাস করুন,ও নিজে ফেম কিংবা আপনাদের এই মতামতের পরোয়া করত না। ও পরোয়া করত না সেই মানুষগুলোর যাঁরা এখন আপসোস করছেন কেন সুশান্তের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ রাখেননি। ও ঘৃণা করত ফেক বন্ধুদের, ফোন কলস এবং লোক দেখানো কথাবার্তাকে। ও রিজেক্ট করেছে তোমাদের পার্টি, তোমরা ওকে দূরে ঠেলে দাওনি। ও রিজেক্ট করেছে তোমাদের লবি'।
ওর ক্যাম্পের প্রয়োজন হয়নি,ওর নিজের একটা রাজত্ব ছিল, ও লড়াই করতে জানত। ও নিজের জায়গা করে নিয়েছিল জ্বলন্ত সূর্যের মধ্যে। ও আউটসাইডার ছিল এবং বিশ্বাস করুন ও ইনডাইসার হওয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেনি। কারণ ছবির বাইরেও ওর একটা জগত ছিল,ইন্ডাস্ট্রি ওর জীবনে ক্ষুদ্র একটা অংশ,এর বাইরে অনেক অনেক জগত ওর ছিল। ও সাক্সেস নিয়ে চিন্তা ছিল না, তবে ও অসফল হয়নি কোনদিন। ওর সমসমায়িক কোনও হিরোর থেকে অনেক বেশি সুপারহিট ছবি সুশান্ত দিয়েছে। ও অ্যাওয়ার্ডের পরোয়াও করত না। ও একটা অ্যাওয়ার্ড সেরেমানি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল কারণ ও প্রচন্ড বোর হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় সেরা অভিনেতার ক্যাটেগরিটার ঘোষণা পর্যন্ত হয়নি। তোমাকে অনেক কিছু দিতে হত ওঁর আগ্রহ নিজের উপর কেন্দ্রীভূত করতে,তার জন্য একটা অ্যাওয়ার্ড যথেষ্ট নয়'।