বহু বছর পর ফের একবার জমিয়ে বলিউডে কাজ শুরু করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। টানা ৪৫ দিন মুম্বইয়ে কাটিয়ে সদ্য কলকাতায় ফিরেছেন 'বুম্বাদা'। বিমানবন্দরে নেমে মনে মনে 'যাক এলাম' বলা থেকে গরম ভাত, মাছের ঝোল আর গন্ধরাজ লেবুর জন্য আনচান করা থেকে বলিউড, টলিউড, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সব নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। বি-টাউনের কাজের ধারার সঙ্গে টলিপাড়ার কাজের পার্থক্যের ব্যাপারে সোজাসুজি জানানো থেকে শুরু করে ইঙ্গিত দিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে পর্দায় তাঁর ফের জুটি বাঁধার কথার!
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টলি-তারকা জানিয়েছেন দীর্ঘদিন পর বলিউডে কাজ করে তিনি মুগ্ধ। বাংলা ছ ইন্ডাস্টির সঙ্গে সেখানকার কাজের ধরণের বিস্তর ফারাক। সবমিলিয়ে এককথায় দারুণ হয়েছে তাঁর সেখানকার অভিজ্ঞতা। বলিউডে নিজের নতুন প্রোজেক্টের ব্যাপারে বেশি কিছু না বললেও এটুকু জানা গেল সেটি একটি পিরিয়ড পিস।ওই ছবিতে ধরা হবে ১৯৩০-১৯৪০ এর সময়টুকু। নিজের কাজ নিয়ে সেখানেও কোনও আপোষ করেননি তারকা। আরও জানা গেল, তাঁর ভুল-ত্রুটি কোথায় হচ্ছে সে ব্যাপারে সরাসরি জানার জন্য দারুণ এক উপায় বের করেছিলেন প্রসেনজিৎ। তাঁকে 'স্যার' বলে ডাকা শুটিং ইউনিটের ক্রুয়ের দলের সঙ্গে মিশে গেছিলেন।
কোনও রাখঢাক না রেখেই জানালেন বলিউডের সঙ্গে টলিউডের কাজের মূল পার্থক্যের জায়গাগুলো। 'বুম্বাদা'-র কথায়, ' এখানে শুটিংয়ে যদি আমরা ৪০জন কলাকুশলী নিয়ে কাজ করি, মুম্বইয়ে সেটা ৪০০জন! এতটাই ফারাক। তারপর ধরুন বাজেট। বলিপাড়ার ছবির বাজেট অনেক অনেক বেশি। একটি ছবি প্রস্তুতির ব্যাপারে তাঁদের ওয়ার্কশপ দেখে ভালো না লেগে উপায় নেই। ছবি তৈরির পুরো ব্যাপারটাই এত আঁটোসাঁটো যে সত্যিই ভালো না লেগে উপায় নেই। আমার মতে, বলিউড অনেকটা কোনও বড় স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ খেলার মতো আর সেই তুলনায় এখানে কাজ করাটা অনেকটা পাড়ার ম্যাচ খেলার মতো আর কী'।
কথা বললেন মুম্বইয়ে বাংলা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের কাজ করা নিয়ে বিতর্ক নিয়েও। এ প্রসঙ্গে সোজাসুজি বললেন, 'বলিউড কখনওই বাজেট নিয়ে ভাবে না। সুতরাং ছবির বাজেট কমাতে বাংলা থেকে অভিনেতা, অভিনেত্রীদের তাঁরা নিচ্ছে এ কথা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। ওঁরা এখন ফ্রেশ মুখের খোঁজে রয়েছে যাঁরা অভিনয়টাও চুটিয়ে করতে পারে। আর টলিপাড়ার সেরকম অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভাব নেই মোটেই। আর তাছাড়া দেখুন, ওটিটি হওয়ার অনেক আগে থেকেই শ্বাশত চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম অনেক বড় নাম সেখানে। যীশু সেনগুপ্তও আজকাল দারুণ জনপ্রিয় সেখানে। যথেষ্ট সম্মান পান তাঁরা। কী বলবেন তাহলে?'
বক্তব্যের শেষে ইঙ্গিতও দিলেন পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিকের পরিচালিত আগামী ছবিতে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে ফের পর্দায় জুটি বাঁধতে পারেন তিনি। শেষবার বড়পর্দায় এই সুপারহিট জুটিকে দেখা গেছিল কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের 'দৃষ্টিকোণ' ছবিতে।