টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় শো হল কৌন বনেগা ক্রোড়পতি। বা সংক্ষেপে কেবিসি । দীর্ঘদিন ধরেই দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছে এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতীযোগীরা এসে পৌঁছান অং শ নিতে। একের পর এক কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জিতে নেন বড় বড় অর্থমূল্যের পুরস্কার। স্বয়ং বিগ বি অমিতাভ বচ্চন থাকেন অ্যাঙ্করের ভূমিকায়। অনেকেই আসেন, বড় অর্থ জেতেন, ভাইরালও হন। কিন্তু সাধারণত কোনও প্রতিযোগী যিনি মাত্র সাড়ে বারো লাখ জিতেছেন, তাঁর কথা বা আচরণ মন ছুঁয়ে যায় না। সেরকমটাই হল কেবিসির চলতি সিজনের ৬৯তম এপিসোডে বাঙালি আলোলিকা ভট্টাচার্য গুহর সঙ্গে। স্বয়ং অমিতাভ বচ্চনও তাঁর সেই ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে। টাকার অর্থ নয়, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও কীভাবে হাসিখুশি ভাবে জীবন নির্বাহ করা যায়, তার শিক্ষা দিয়ে গেলেন এই মহিলা।
(আরও পড়ুন: অন্য মেয়ের দিকে বারবার তাকায়, প্রেমিকের ‘চোখ গেলে’ দিলেন প্রেমিকা! শেষমেশ যা হল…)
সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণী আলোলিকা অনবরত হাসতে ভালোবাসেন। আর সেই হাসিই নজর কাড়ল সকলের। সম্প্রতি তাঁকে নিয়ে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। তাতে দেখা গিয়েছে অমিতাভের সঙ্গে মজাদার সব কথা বলছেন তিনি। হাসতে হাসতে ‘জয় হো কেবিসি’-ও বলতে শোনা যায় তাঁকে। তবে এটা বলার কারণও বুঝিয়ে বলেন ওই তরুণী। অমিতাভ জিজ্ঞেস করতে তিনি বলেন, ‘বাপরে সে কি বিশাল হোটেল। আমার নিজের পক্ষে তো এত বড় হোটেলে থাকা সম্ভব নয়। আবার বরের পক্ষেও হত না। কেবিসিতে খেলতে এসে ভালোই হল! মনের ইচ্ছে পূরণ হল।’ কথাগুলো বলতে বলতে তাঁর মুখে দেখা যায় ‘বড় একটা দাঁও মারার’ হাসি। একইসঙ্গে হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়েন অমিতাভ।
(আরও পড়ুন: নামের মানে ভীষণ ভারী! রাজ-শুভশ্রীর মতো আর কোন সেলেব সন্তানের কঠিন নাম দিলেন হালে)
আবার একটু পরে অমিতাভকে ওই তরুণী বলেন, এই প্রথম তিনি প্লেনে চড়েছেন। তাতে নাকি খুবই মজা হয়েছে! সেই মজার বিবরণও দিলেন তিনি। ১৮ বছর ধরে কেবিসিতে আসার চেষ্টা করছেন আলোলিকা, ইচ্ছা বিগ বি-র সঙ্গে দেখা করার। কিন্তু কোনও স্টেজ ফ্রাইট দেখা গেল না তাঁর মধ্যে। হাজার ওয়াটের আলোর মধ্যেও দুনিয়ার নজর যখন তাঁর ওপর, অত্যন্ত অবলীলায় উত্তরগুলি দিয়ে গেলেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘ট্রেনে উঠলে আমরা নিজেদের মালপত্র নিজেদের কাছেই রাখি। সিটের তলায় ঢুকিয়ে বারবার দেখতে থাকি। ঠিক জায়গায় আছে কি না। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলেও সেই চিন্তা হয়! প্লেনে নাকি সেসব চিন্তাই নেই। কিছু বেশি টাকা দিলে আপনার ব্যাগ অন্যরাই দেখভাল করবে!’ বলতে বলতেই হেসে ওঠেন ওই তরুণী। ব্যাপারটার কৌতুক আন্দাজ করে হাসতে থাকেন বিগ বি। তারপর নিজের কম জ্ঞান নিয়েও রঙ্গ রসিতা করতে পিছপা হননি তিনি। অমিতাভকে বলেন যে অন্যরা যখন কুইজের প্রশ্ন ঝালিয়ে নিচ্ছিল, তিনি কোনও চাপ না নিয়ে বসে ছিলেন, কারণ তিনি জানতেন যে তাঁর হটসিটে আসার কোনও চান্স নেই। ফাস্টেস্ট ফিঙ্গার ফাস্টের প্রশ্নটিও যথেষ্ট শক্ত ছিল, কিন্তু সেই বাধা অতিক্রম করে তিনি হটসিটে আসেন। জিতলেনও বড় অর্থ। তবে সবচেয়ে বড় কথা মন জিতলেন নেটপাড়ার। আজকের দুনিয়ায় যখন ক্রিন্জ কন্টেন্ট ভাইরাল হয়, সেখানে নির্মল আনন্দের এই ভিডিয়োতে মেতেছে আট থেকে আশি। অনেকে চান আলোলিকা যেন স্ট্যান্ডআপ কমেডিতে আসেন। তাঁর যে নিজেকে নিয়ে মজা করতে পারার যে ক্ষমতা, সেটা তো আজকের দিনে বড়ই দুর্লভ। ভবিষ্যতের কথা কেউ জানে না, কিন্তু আজকের জন্য আলোলিকা জয় হো!