একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং তৃণমূল, দুই শিবিরেরই বড় বাজি হতে চলেছেন সেলেব্রিটিরা। ভোটের আগে রমরমিয়ে বিজেপি কিংবা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন টলি তারকারা। কেউ শিবির বদলেছেন তো কেউ আগে থেকেই দলের পাশে থেকে ভোটের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছেন। তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ছেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়,সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়,জুন মালিয়া, লাভলি মিত্র, সোহম চক্রবর্তী,কাঞ্চন মল্লিক, রাজ চক্রবর্তীরা। আবার ভোটযুদ্ধে বিজেপি বাজি রেখেছে যশ দাশগুপ্ত, হিরণ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী, তনুশ্রী, পার্নো,রুদ্রনীল, পায়েল সরকারদের মতো তারকাদের উপর।
প্রার্থী তালিকায় ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নিলে দেখা যাবে তারকা বনাম তারকার লড়াই প্রায় নেই, ব্যতিক্রম দুটো কেন্দ্র। সোনারপুর দক্ষিণ থেকে টিএমসির হয়ে ময়দানে লাভলি মিত্র, এই আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছেন অঞ্জনা বসুকে। অর্থাত্ ছোটপর্দার প্রিয় ‘জলনূপূর’ এবং জাঁদরেল এক শাশুড়ির লড়াই দেখবে সোনারপুর (দক্ষিণ)। এছাড়াও আসানসোল দক্ষিণে তারকা V/S তারকা লড়াইয়ের আঁচ মিলবে। এই বিধানসভা কেন্দ্রে ঘাসফুলের তরফে প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন সায়নী ঘোষ। অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী, তথা টলিপাড়ার পরিচিত ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন।
এতো গেল তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াইয়ের কথা। সিপিআইএম-এর সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকায় একমাত্র তারকা দেবদূত ঘোষ। তিনি টলিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে লড়ছেন বিধানসভা ভোটে, এই হেভিওয়েট কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিনোদন জগতের বদলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুলকে রাজনীতির জগতের মানুষ বলেই ধরে নেওয়া হয়। তবুও তাঁর শিকড় তো সেই গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রি। তাই এখানেও তারকা বনাম তারকা লড়াইয়ের সুযোগ রয়েছে। যদিও এই কেন্দ্র বাবুল বনাম মমতার অন্যতম সেনাপতি অরূপ বিশ্বাসের লড়াইয়ের দিকেই তাকিয়ে সকলে। সেখানে কিছুটা পিছিয়ে দেবদূত ঘোষ।
এই দুটো কেন্দ্র বাদ দিলে, বাকি ২৯১ বিধানসভা আসনে তারকা ভার্সেস তারকা লড়াই নেই, সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নামছেন না সিংহভাগ নামজাদা তারকাই। টিকিট পাওয়া, কে কোন কেন্দ্র থেকে লড়বেন- সবটাই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপর নির্ভর করে। যদিও প্রার্থীর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, তারকাদের অপেক্ষাকৃত 'সেফ জোন' দিতেই, একে অপরের সঙ্গে ভিড়িয়ে দেওয়াটা সঠিক মনে করেনি বিরোধী দলগুলি। জনপ্রিয়তার বিচারেই যাঁদের ভোট বাক্স ভরবে, সেখানে জনপ্রিয়তা কার বেশি- সেই লড়াইয়ে হাঁটতে চায়নি রাজনৈতিক দলগুলি। পাশাপাশি তারকাদের রাজনৈতিক কেরিয়ার দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে, ভোটযুদ্ধে হারলে অনেকেই পুরোনো পেশায় ফিরবেন। সেখানে সহকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে নেমে লাভ নেই। তাই ‘প্ল্যান বি’-এর কথা মাথায় রেখেই টলিপাড়ার ‘বন্ধু’দের বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে নামতে প্রস্তুত ছিলেন না অনেকেই।