সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জিনাত আমান পঞ্চমুখ হলেন মা বর্ধিনী শারওয়াচটারের প্রশংসায়। মা-কে 'অসাধারণ মহিলা', 'নিরাপদ আশ্রয়স্থল' এবং 'করুণাময়, সুন্দর এবং চাবুক-স্মার্ট' বলে অভিহিত করেন। অভিনেত্রী স্মৃতি রোমন্থন করেন, কীভাবে তাঁর মা তাঁর অভিনেত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন। সঙ্গে জানান যে, তার মা কখনোই কোনও পুরুষকে তাঁর ‘যোগ্য’ বলে মনে করেননি। এমনকী, তাঁর পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত তাঁর মনে কতটা আঘাত দিয়েছিল, সেটাও উল্লেখ করলেন। মঙ্গলবার জিনাত ইনস্টাগ্রামে সিন্ডা, তাঁর বাবা আমানুল্লাহ খান এবং তার জার্মান সৎ বাবা আঙ্কেল হেইঞ্জের ছবিও শেয়ার করে নেন।
জিনাত তাঁর মা, বাবা, সৎ বাবার ছবি শেয়ার করে
অভিনেত্রী লেখেন, ‘প্রতি রবিবার, একজন নিবেদিত শুভাকাঙ্ক্ষী আমাকে তাঁর আর্কাইভ থেকে পুরনো ছবি পাঠান। এই রবিবার তিনি আমাকে আমার মায়ের এই দুটি ছবি পাঠিয়েছিলেন, যথাক্রমে আমার বাবা আমানুল্লাহ খান এবং আমার জার্মান সৎ বাবা আঙ্কেল হেইঞ্জের সঙ্গে তোলা। আমার মায়ের মতো অসাধারণ নারী পৃথিবীতে আর কেউ নেই। সে ছিল আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তিনি ছিলেন দয়ালু, সুন্দরী এবং চাবুক-স্মার্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘পঞ্চাশের দশকে তিনি এবং আমার বাবা আলাদা হয়ে যাওয়ার পরে, মা ব্যবসা শুরু করলেন। নিজের রোজগারে সবটা চালাতেন। তিনি আমাকে সেরা বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়েছিলেন এবং কখনও মিস করতেন না আমার সঙ্গে দেখা করতে আসা। একগুচ্ছ উপহার আনতেন সেই সময়। আমি যখন অভিনয় কেরিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নেই, তখন তিনি আমার ম্যানেজার হওয়ার জন্য নিজের কাজ ছেড়ে দিলেন। আমার চুক্তিগুলি নিয়ে আলোচনা করতেন, আমার উপার্জন বিনিয়োগ করতেন, আমার টিফিন প্যাক করতেন, আমার সব কিছু চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।’
জিনাতের মা 'কখনই কোনও পুরুষকে যোগ্য মনে করেননি'
জিনাত আরও লিখলেন, ‘মা কখনোই ভাবেননি যে, কোনও পুরুষ আমার যোগ্য। এই একটা বিষয়ে আমাদের মতানৈক্য হত। যখনই মন খারাপ হত, আমি হামাগুড়ি দিয়ে নেপিয়ান সি রোডে আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে তাঁর বিছানায় ঢুকে যেতাম। তাঁর পাশে শুয়ে থাকতাম, তাঁর হাতটা ধরতাম। কোনও কথা বলারও দরকার পড়ত না। তবে আমার অশান্ত মন স্থির হত তাতে। আমি নিরাপদ বোধ করতাম।’
এরপর পালিয়ে বিয়ে করা নিয়েও লিখলেন তিনি। জিনাতের কথায়, ‘আমি পালিয়ে যাওয়ায় তাঁর হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। তবে আমার ছেলের আর আমার মায়ের জন্মদিন একইদিনে। ১৯৯৫ সালে মা যখন মারা গেল, তখন মনে হচ্ছিল আমার কাঁধ থেকে সুরক্ষার পর্দাটা কেউ যেন কেড়ে নিয়ে গেছে। এই ছবিগুলি এখন আমার কাছে ভীষণ মূল্যবান। আমার স্মৃতির নিরাপদ আশ্রয়স্থল। এ তো গেল আমার মায়ের কথা। আপনাদের মায়েদের ব্যাপারেকিছু বলুন।’
মাজহার খানকে বিয়ে করেছিলেন জিনত ১৯৮৫ সালে। ১৩ বছরের দাম্পত্য ছিল তাঁর। সিমি গরেওয়ালের শো-তে জিনাতকে বলতে শোনা গিয়েছিল, বিয়ের ১ বছরের মধ্যে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন কতটা ভুল করেন তিনি এই বিয়েতে। তবে হাল ছাড়েননি। অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, মাজহার কখনও চাননি একজন তারকা হিসেবে উন্নতি হোক জিনাতের। বরং বরাবর চাইতেন, যেন সন্তান মানুষই করেন। সেই সময় মায়ের সঙ্গেও দূরত্ব এসেছিল জিনাতের পালিয়ে বিয়েটা করায়। সন্তানের জন্মের পর কিছুটা শুধরে ছিল পরিস্থিতি।