কাল থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে একটা লম্বা উইকএন্ড। শনি, রবির সঙ্গে আবার সোমবারটাও জুড়ে গেছে এই সপ্তাহে! স্বাধীনতা দিবসের ছুটি নিয়ে বেশ একটা লম্বা সপ্তাহান্ত। এমন সময় বাড়ি থাকতে ইচ্ছে করছে না? তাহলে যাবেন নাকি ইতিউতি? যাবেন? তাহলে আর দেরি কেন? চলুন দেখে নিন এই লম্বা সপ্তাহান্তে কোথায় যেতে পারেন!
দেখুন, পশ্চিমবঙ্গ এমন একটা রাজ্য যেখানে পাহাড় থেকে সমুদ্র, জঙ্গল থেকে গ্রাম সব পাবেন। তবে বাঙালি তো! তাঁদের মনটা একটু বেশিই পাহাড় পাহাড় করে। তাই চলুন এই সপ্তাহের শেষে যাওয়া যেতে পারে এমন কটি পাহাড়ি জায়গার নাম।
সামসিং: মেঘ, নদীর আবাসস্থল এটি। একদিকে দুরন্ত গতিতে নদী বয়ে চলেছে, অন্যদিকে মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। এই দুর্দান্ত ভিউটা যদি মিস না করতে চান তাহলে অবশ্যই যেতে হবে এখানে। একটা শান্ত নিরিবিলি চা বাগানের মাঝে অবস্থিত গ্রাম। কাছেই আছে সান্তালেখলা, রকি আইল্যান্ড ইত্যাদি। প্রতিটা জায়গার সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। একবার গেলে ফিরতে মন চাইবে না। সব থেকে বেশি আকর্ষণ করবে এই জায়গার শান্ত পরিবেশ। থাকার জন্য পেয়ে যাবেন একাধিক হোমস্টে। যেতে হলে কলকাতা থেকে ট্রেন ধরুন রাতে, পরদিন সকালবেলায় নেমে যান শিলিগুড়ি। সেখান থেকে বুক করে নিন কোনও গাড়ি বা ভরসা রাখুন শেয়ারের গাড়িতে আর তারপর রওনা দিন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। মাত্র ২ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন আপনার গন্তব্যে।
জলঢাকা: ঝালংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য যেতেই পারেন। সঙ্গে আছে বিন্দু ব্যারেজ। এক দিকে ভারত অন্য পারে ভুটান। মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা জলঢাকা। এছাড়া কাছে পিঠে আছে নেওরা জাতীয় উদ্যান। সেখান থেকেও ঘিরে আসতে পারেন। কয়েকদিনের ছুটির জন্য আদর্শ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা এটি। থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোমস্টে আছে যেখানে আপনি থাকা খাওয়া দুই পাবেন। এখানে যেতে হলে শিয়ালদহ অথবা হাওড়া থেকে ট্রেন ধরুন, পরদিন ভোরে শিলিগুড়ি নেবে গাড়ি নিয়ে নিন আর মাত্র দু থেকে তিন ঘণ্টায় পৌঁছে যান সুন্দরী জলঢাকায়।
চালসা: শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্স যাওয়ার পথেই পড়ে এই জায়গাটি। মালবাজারের কয়েক কিলোমিটার পরেই অবস্থিত এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটি। হিমালয়ের ঠিক পাদদেশে অবস্থিত চারপাশে সবুজ পাহাড় এবং চা বাগান দিয়ে ঘেরা। সঙ্গে আছে পাহাড়ি নদী, এবং জঙ্গলের হাতছানি। এখানে গেলে অবশ্যই গরুমারা জাতীয় উদ্যানে যাবেন কিন্তু! এই পাহাড়ি গ্রামটায় যেতে হলে আপনাকে কলকাতার শিয়ালদহ কিংবা হাওড়া থেকে ট্রেন ধরতে হবে। দশ ঘণ্টার জার্নির পর শিলিগুড়ি নেমে সেখান থেকে গাড়ি, শেয়ার বা বুক করে নিতে পারেন। তাহলে আর ভাবছেন কেন পাহাড়ি জঙ্গুলে গ্রামে কাটিয়ে আসুন কটা দিন! থাকার জন্য আছে বেশ কয়েকটি হোটেল এবং হোমস্টে যার ভাড়া আপনার সাধ্যের মধ্যেই।
মংপু: এটিও একটি ছোট্ট গ্রাম। আয়েস করে অলস হয়ে কটাদিন কাটানোর আদর্শ জায়গা বলতে পারেন। ছোট্ট পাহাড়ের উপর এক ফালি সাজানো গ্রাম। দেখা যায় কালিম্পংয়ের রাতের শোভা, পাহাড়ের গা বেয়ে যেন সারি দিয়ে জোনাকি জ্বলছে। আছে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত মৈত্রেয়ী দেবী বাড়ি, ফুলের বাগান, ইত্যাদি। এছাড়া কাছেই তিস্তার পাড়ে ঘোরার সুযোগ থাকবে, অহলদারা ভিউ পয়েন্টের শোভাও দেখতে পারবেন। থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোমস্টে আছে এখানে। এখানে যেতে হলেও আপনাকে কলকাতা থেকে ট্রেনে করে শিলিগুড়ি যেতে হবে, ওখান থেকে গাড়ি করে এক ঘণ্টায় পৌঁছে যেতে পারবেন আপনার গন্তব্যে।