কোলেস্টেরল মানেই ভয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে এই নিয়ে দুশ্চিন্তা। কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে না থাকলেই শুরু হয় বিপত্তি। একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পেরিয়ে গেলে কোলেস্টেরল নানারকম রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর মধ্যে প্রধান হল হৃদরোগ। রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। তবে কোলেস্টেরল মানেই শরীরের জন্য খারাপ, সেটাও ঠিক কথা নয়।
আমাদের রক্তে সাধারণত দুই ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। একটি বেশি ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন ও অন্যটি কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন। বেশি ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল)-কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় ভালো কোলেস্টেরল বলা হয়। অন্যদিকে কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল) হল খারাপ কোলেস্টেরল। এই খারাপ কোলেস্টেরলই যতরকম হৃদরোগের কারণ। রক্তে এই কোলেস্টেরল বাড়তে থাকলে বিপদের আশঙ্কা বাড়ে। ধমনীর ভিতর এই ধরনের কোলেস্টেরল জমে রক্ত চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়। এর থেকেই দেখা দেয় হার্ট অ্যাটাকের মতো গুরুতর সমস্যা।
তবে প্রতিদিনের ডায়েটেই রয়েছে কোলেস্টেরল থেকে মুক্তির উপায়। রোজকার ডায়েটে কিছু খাবারে থাকে এই ধরনের খারাপ কোলেস্টেরল বেশি পরিমাণে থাকে। খাদ্যরসিকরা সবসময় সে খাবারগুলো এড়াতে পারেন না। তবে এমন কিছু খাবারও রয়েছে যা খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই খাবারগুলো রোজকার তালিকায় থাকলে হৃদরোগের আশঙ্কা আর থাকে না। সম্প্রতি পুষ্টিবিদ লোভনিত বাত্রা তাঁর ইনস্টাগ্রামে তেমনই কয়েকটি খাবারের হদিশ দিয়েছেন।
১. চিয়া বীজ: চিয়া বীজে রয়েছে উদ্ভিদজাত ওমেগা থ্রি অ্যাসিড ও ফাইবার। এই পুষ্টি উপাদানগুলো রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়।
২. বার্লি: বার্লির মধ্যে রয়েছে দ্রবণীয় ফাইবার ও বেটা গ্লুক্যান। এই দুটি পুষ্টি উপাদান রক্তে ভালো কোলেস্টেরল ও খারাপ কোলেস্টেরলের অনুপাত ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৩. আখরোট: স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের জন্য খারাপ। একইসঙ্গে হৃদরোগের প্রধান কারণ। আখরোট মূলত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এটি একটি মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। আখরোট খেলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে। অন্যদিকে বাড়তে থাকে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ।
৪. নারকেল তেল:নারকেল তেলে অতি সামান্য পরিমাণ খারাপ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। বাকি ফ্যাটি অ্যাসিডগুলো রক্তের জন্য ভালো। নিয়মিত নারকেল তেল রান্নায় ব্যবহার করলে তা ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে।
৫. সোয়াবিন: পুষ্টিগুণে সোয়াবিন মাংসের মতোই। এর মধ্যে রয়েছে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার ও প্রোটিন। রক্তে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে এই প্রতিটি উপাদানই প্রধান ভূমিকা নেয়।