কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ কেমন হবে তা নির্ভর করে কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর। কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে কাজের গুণমান নিজে থেকে বাড়তে থাকে। কর্মীদের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশও গড়ে ওঠে। অন্যদিকে, কর্মীদের মধ্যে অবসাদ তৈরি হলে কাজে তার প্রভাব পড়ে। কাজের গুণমান কমে যায়। কাজের পরিবেশ নষ্ট হয়। খিটখিটে ভাব, অল্পেই মেজাজ হারিয়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটতে থাকে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে সংস্থায় কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য যত ভালো, সেই সংস্থার গড় আয় ও বার্ষিক উৎপাদনের পরিমাণ তত বেশি।
এমফ্যাসিসের চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার শ্রীকান্ত কারা এইচটি ডিজিটালকে জানাচ্ছেন, কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত বিনামূল্যে তাদের কাউন্সেলিং করানো উচিত। এছাড়া ওয়েলনেস প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে একটি অ্যাপ তৈরি করা যেতে পারে। এই অ্যাপের মাধ্যমে কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য নানা পরামর্শ দিতে পারেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, অ্যাপে থাকতে পারে কাজের চাপ ও অ্যাংজাইটি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি হ্যান্ডবুক। সংস্থার এইচআর-এর তরফে সব কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যবিমার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়া, মাঝে মাঝে কয়েকটি সেশনের আয়োজন করা যায় যেখানে কর্মীরা নিজেদের মনের কথা খোলাখুলি বলার সুযোগ পাবে। সেশনগুলিতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও আলোচনাও জরুরি।
ভালো কাজের জন্য কর্মীদের পুরষ্কৃত করা, জিমে সদস্য হওয়ার জন্য বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করে দেওয়া ইত্যাদি কাজের পরিবেশকে উন্নত করে। নিয়মিত বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করলে কর্মীদেরও নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হয়।
কোয়েস গ্রুপের গ্রুপ চিফ পিপল অফিসার রুচি অহলুওয়ালিয়ার মতে, কাজের পরিবেশ খারাপ হলে কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক দুইরকম স্বাস্থ্যেই প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি, নানারকম পারিবারিক সমস্যারও শুরু হয় এর থেকেই। নমনীয় কাজের রুটিন, বাড়ি বসে কাজের মতো সুবিধা কর্মীদের কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। রুচির সংস্থা বর্তমানে এমন একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ যেখান থেকে কোয়েসের কর্মীরা ২৪ ঘন্টাই মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে নানারকম পরামর্শ পেয়ে থাকেন।
স্কেলারের পিপল ও কালচারের প্রধান অশোক রাজের কথায়, একটি সংস্থায় কাজের পরিবেশ সুন্দর করে তুলতে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কর্মীদের পরামর্শ ও প্রতিক্রিয়া জেনে নেওয়া জরুরি। নির্দিষ্ট দিন অন্তর কর্মীদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনায় বসলে কর্মীরা নিজেদের সংস্থার অংশ বলে মনে করেন।