বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা। তবে বর্তমান সময়ে মাত্রাছাড়া দূষণের কারণেও বাড়ছে শ্বাসকষ্টের রোগ। তেমনই একটি রোগ হল সিওপিডি। বিজ্ঞানের পরিভাষায় ফুসফুসের এই রোগটির পুরো নাম ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিসিস। এই রোগে আক্রান্তের ফুসফুসে অক্সিজেন সঠিক মাত্রায় পৌঁছাতে পারে না। ফুসফুসের সূক্ষ্ম পথগুলির মধ্যে দিয়ে অক্সিজেন চলাচল কমে যায়। এর ফলে শরীর থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইডও সহজে বেরোতে পারে না। সিওপিডির বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া দরকার। নয়তো বাড়তে পারে সমস্যা।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, সিওপিডিতে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ মহিলাদের ফুসফুস পুরুষদের তুলনায় আকারে ছোট। এছাড়াও ইস্ট্রোজেন হরমোন মহিলাদের শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা নেয়।
সঠিক সময়ে সিওপিডি ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে এর থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখলে সহজেই রোগটিকে চিহ্নিত করা যায়।
১. দীর্ঘসময় ধরে কাশি: সিওপিডিতে আক্রান্ত হলে কোনও কারণ ছাড়াই দীর্ঘক্ষণ ধরে কাশি হতে থাকে। সহজে কাশি থামতে চায় না। প্রায় সারাদিন ধরেই এই সমস্যা চলতে থাকে। চার থেকে আট সপ্তাহ এমন কাশির সমস্যা চলতে থাকলে তা সিওপিডি-এর লক্ষণ হতে পারে। দীর্ঘসময় ধরে কাশি হলে, তা কখনই এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়।
২. হলুদ বা সবুজ কফ: সিওপিড হলে প্রচুর পরিমাণে কফ বুকে জমতে থাকে। কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে সে কফ নির্গত হয়। কফের রঙ হলুদ বা সবুজ হলে তা ফুসফুসের সংক্রমণের লক্ষণ। হলুদ বা সবুজ কফ প্রায়ই বের হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩. শ্বাসকষ্ট: সিওপিডির আরেকটি লক্ষণ হল শ্বাস নেওয়ার সমস্যা। বেশ কিছুক্ষণ হাঁটা বা শারীরিক পরিশ্রম করার পর শ্বাস নিতে অনেকের অসুবিধা হয়। এক্ষেত্রে মনে হয় বুকভরে শ্বাস নিতে চাইলেও সম্পূর্ণ শ্বাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এটি সিওপিডির লক্ষণ হতে পারে।
৪. অকারণে ওজন কমে যাওয়া: কোনও রকম শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমে যাচ্ছে, এমনটা অনেকসময় দেখা যায়। এটি মূলত শ্বাসের সমস্যা থেকে দেখা যায়। দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে কোনও কারণ ছাড়াই ওজন কমতে থাকে। হঠাৎ করে এমন ওজন কমার লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। কারণ এটি সিওপিডির অন্যতম লক্ষণ।