করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। এখন অনেকের মনে একটিই প্রশ্ন, শরীরে তৈরি হওয়া ইমিউনিটি কতদিন সুরক্ষা দিতে পারবে? করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অনেকেই ভেবেছিলেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার একটি ভালো দিক হল, শরীরে ইমিউনিটি তৈরি হওয়া। যার ফলে ভবিষ্যতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে করোনা ভাইরাস নানা রূপে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। এমনকী আগে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরাও আবার এই ভাইরাসের শিকার হচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা বলছেন, টিকাকরণের মাধ্যমেই হোক বা সংক্রমণের মাধ্যমেই হোক করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে একজন ব্যক্তি কখনওই সম্পূর্ণ সুরক্ষা পাবেন না। এই ধরনের ভাইরাসে মানুষের শরীর একাধিকবার আক্রান্ত হতে পারে। কারণ করোনা ভাইরাস প্রতিনিয়ত তার রূপ পরিবর্তন করতেই থাকে। এই ভাইরাস এখনও সাধারণ সর্দি কাশির পর্যায়ে যায়নি।
কতদিন পর্যন্ত মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ইমিউনিটি থাকতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার ডেল্টা রূপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আবার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৯০ শতাংশ কম। কিন্তু ওমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সেই আশঙ্কা মাত্র ৫০ শতাংশ কম।
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকায় করা এক সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে আবার সংক্রমিত হতে পারেন। কিন্তু ডেনমার্কের একদল গবেষক বলেছেন, তাঁদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অনেকেই ২০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হয়েছেন।
কিন্তু কিছু বিশেষজ্ঞর মতে, একাধিকবার সংক্রমিত হওয়া সব সময়েই যে খুব আতঙ্কের তা নয়। তাঁদের মতে, দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে শরীরেরBকোষ ওT কোষ সেই সংক্রমণের মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। আমেরিকার বিশিষ্ট চিকিৎসক গবেষকShane Crotty জানাচ্ছেন, আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমে ভাইরাসকে মোকাবিলা করার সমস্ত রকমের অস্ত্রই মজুত আছে। এমনকী একাধিকবার সংক্রমিত হলেও তা সবক্ষেত্রেই উদ্বেগজনক নয়। শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে মজবুত করার জন্য তিনি টিকাকরণের উপর জোর দিয়েছেন।
Dr. Abu Raddad, কাতারের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী একটি সমীক্ষা করেছেন। এই সমীক্ষা ১,৩০০ জন একাধিকবার সংক্রামিত ব্যক্তির উপর করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে যে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারে সংক্রামিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়নি। ওই ১,৩০০ জনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও যথেষ্টই কম।
এই ভাইরাসকে মোকাবিলা করতে প্রায় সমস্ত চিকিৎসকরা টিকাকরণের উপর ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছেন। ২টি ডোজ ছাড়াও বুস্টার ডোজের প্রয়োজনীয়তার কথা প্রায় সব চিকিৎসকই স্বীকার করেছেন। এছাড়াও চিকিৎসকরা বলছেন, টিকা ছাড়াও মাস্ক পরা, স্যানিটাইজারের ব্যবহার, দূরত্ব বিধি মেনে চলা, ও সঠিক ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা করোনা প্রতিরোধে খুবই কার্যকর।