এক-দু’টি নয়। সব মিলিয়ে ৬০০-র বেশি ইঁদুর মারল স্কুল পড়ুয়ারা। প্রায় ১০০ দিন ধরে তারা করল শিকার। হালে এমনই ঘটেছে নিউজিল্যান্ডে। আর এই ঘটনায় দুই ভাগে বিভ্ক্ত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছে? নিউজিল্যান্ডের স্টুয়ার্ট দ্বীপে ইঁদুরের সংখ্যা মারাত্মক বেড়ে গিয়েছিল। সেই সংখ্যা কমাতেই হাফমুন বে স্কুলের পড়ুয়ারা এমন এক অদ্ভুত শিকারে নামে। পড়ুয়াদের মধ্যে হোয়াইল বেলা নামের একজন সবচেয়ে বেশি ইঁদুর শিকার করেছে। ১১ বছরের এই কিশোরী ৬৪টি ইঁদুর মেরেছে বলে খবর।
কিন্তু কেন এই শিকার? সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দ্বীপে ইঁদুরের সংখ্যায় মারাত্মক বেড়ে যাওয়ার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছিল। বিশেষ করে ওই দ্বীপের কিছু পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছিল। বিশেষ করে কিউয়ির মতো পাখির সংখ্যা কমছিল ব্যাপক হারে। এর কারণ যে সমস্ত পাখি বা প্রাণী মাটিতে ডিম পাড়ে, তাদের ডিম খেয়ে নষ্ট করছিল ইঁদুর। ফলে কমছিল এই সব প্রাণীর সংখ্যা। আর সেই কারণেই স্কুল পড়ুয়াদের এমন উদ্যোগ।
স্কুলের তরফে বলা হয়েছে, সেখানকার পড়ুয়ারা দীর্ঘ দিন ধরেই চায়, তাদের দ্বীপের পুরনো প্রাণীরা আবার ফিরে আসুক। বিশেষ করে তারা চায়, তাদের পছন্দের কিউয়ি যেন আবার দ্বীপে ফিরে আসে। আর সেই কারণেই এমন অদ্ভুত শিকারের আয়োজন।
ইঁদুরগুলি এই দ্বীপের আদি বাসিন্দা নয়। মানুষের সঙ্গে কোনও ভাবে এই দ্বীপে পৌঁছে গিয়েছিল সেগুলি। তার পরে বংশবৃদ্ধি হতে থাকে। আর তাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্য প্রাণীদের জীবন।
হালে নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমের তরফে এই ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে স্কুল পড়ুয়াদের মৃত ইঁদুরের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, তারা মৃত ইঁদুরের সংখ্যা গুনছে।
এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে নেটদুনায়। কারও মতে, প্রকৃতিতে ভারসাম্য রাখার জন্য পড়ুয়ারা যে কাজটি করেছে, সেটি প্রশংসনীয়। আবার কারও মতে, এই ভয়ঙ্কর কাজটি শিশুদের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়। এতে তাদের ভবিষ্যতের উপর প্রভাব পড়তে পারে। কারণ শেষ পর্যন্ত কাজটি পুরোদস্তুর সহিংস একটি কাজ। ছোট থেকেই যদি শিশুদের এমন কাজে উৎসাহ দেওয়া হয়, তাহলে বড় হওয়ার পরে তার প্রভাব তাদের মনে থেকে যেতে পারে বলে মত অনেকের।