গবেষকরা বলছেন, এই মাছির মধ্যে ফেরোমোন নামে এক হরমোন পাওয়া যায়। এই মাছিরা হল রক্তচোষা। এরা মানুষ-সহ বিভিন্ন প্রাণীর রক্ত চুঁষে তাদের শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়। জানা যাচ্ছে, এই মাছি আফ্রিকান ট্রাইপ্যানোসোম নামক ভাইরাসের বাহক। যার ফলে স্লিপিং সিকনেসের মতো রোগ হয়ে থাকে। এই সংক্রমণ কি সত্যি মারাত্মক? কী প্রভাব পড়তে পারে?
টেস্টে মাছি মৌমাছির মতো দেখেতে। সহজে এদের আলাদা করা খুবই কঠিন। এরা এতটাই বিষাক্ত যে আপনার মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে আফ্রিকাতে চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে এই টেস্টে মাছি। এদের দ্বারা ছড়ানো রোগ ট্রাইপানোসোম, রক্ত, লিভার এবং মস্তিষ্ককে ক্ষতি করে। গবাদি পশুরাও এই রোগ থেকে রেহাই পায় না।
বর্তমানে একটি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে এই সংক্রমণের জন্য। আফ্রিকান স্লিপিং সিকনেস একটি ভয়ঙ্কর রোগ-- যার চিকিৎসা করা কঠিন। আমাদের ইমিউনসিস্টেমও এই ট্রাইপোনোসোম রোগ কে আটকাতে পারছে না। ইয়েলের কলা ও জীববিজ্ঞানের গবেষক জন কার্লসন, মলিকুলার, সেলুলার, এবং ইউজিন হিগিন্সের অধ্যাপকরা তাই এই নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
এখানকার মানুষদের কাছে স্লিপিং সিকনেস একপ্রকার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্লিপিং সিকনেস নানা ভাবে লক্ষ্য করা যায়। ঘুমের মধ্যেই হতে পারে মানুষের মৃত্যু। সংক্রমিত ব্যক্তিরা সাধারণত জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি এবং জয়েন্টে ব্যথা নিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকদের কাছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ডের মধ্যে টান লক্ষ্য করছেন তাঁরা। যার ফলে মুড বদলানো, ঘুমের ব্যাঘাত এবং গভীর অলসতার মতো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
গবেষকরা বলছেন আফ্রিকার পরিবর্তিত জলবায়ু এই মাছিদের জন্ম নিতে সাহায্য করে। স্টেটে মাছি সাব-সাহারান আফ্রিকায় পাওয়া যায় তাই ভ্রমণকারীরা যখন বাইরে সময় কাটান বা এই অঞ্চলের পার্ক পরিদর্শন করেন তখন তাদের স্টেটে মাছি কামড়াতে পারে। আগামী দিনে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কীভাবে থামানো যেতে পারে এই মাছিদের?
এ বিষয়ে গবেষকরা বলেছেন মিথাইল পালমিটোলেট (এমপিও) একটি অ্যাফ্রোডিসিয়াক হিসাবে কাজ করে, যা পুরুষ স্টেটে মাছিকে আকর্ষণ করে। বর্তমানে আশার আলো দেখছে গবেষকরা। পুরুষ এবং স্ত্রী মাছির মিলনে যে ফেরোমন নামে হরমোন বের হয় তা দিয়ে এই মাছিকে আটকানো সম্ভব। ফেরোমন দিয়ে ভেজানো একটি প্ল্যাস্টিকের চাকতি মাছি ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যাবহার করা যেতে পারে।