কানাডার এক দল গবেষক দাবি করছেন যে তাঁরা ডায়াবিটিসের জন্য একটি মৌখিক চিকিৎসা তৈরি করেছেন যেখানে ইনসুলিন ট্যাবলেট ইনজেকশনের ডোজের মতোই কাজ করবে।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউবিসি) একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ‘গবেষকরা দাবি করছেন যে তাঁদের বানানো ইনসুলিন ট্যাবলেটগুলির নতুন ভার্সনের ফল ইনসুলিন ইনজেকশনের মতোই ইঁদুরের দেহে কাজ করেছে’।
এই গবেষকদের দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইন্দো-কানাডিয়ান প্রধান গবেষক, ডক্টর অনুভব প্রতাপ সিং, যিনি ইউবিসির ল্যান্ড অ্যান্ড ফুড সিস্টেমের ফ্যাকাল্টি। এই গবেষণার প্রথম অংশটি সায়েন্টিফিক রিপোর্টস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
ডক্টর প্রতাপ সিং, যিনি আইআইটি-খড়গপুরে রাসায়নিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন তিনি জানান, 'এই দারুন ফলাফলগুলি দেখায় যে আমরা ইনসুলিন ফর্মুলেশন তৈরির ক্ষেত্রে সঠিক পথে এগোচ্ছি যা জীবনের মানকে আগামীদিনে উন্নত করবে, প্রতিটি খাবারের আগে আর ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। সারা বিশ্বে নয় মিলিয়নেরও বেশি টাইপ 1 ডায়াববিটিসের রোগী আছেন, এই চিকিৎসা পদ্ধতি তাঁদের জীবনের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে।' তিনি আরও জানান যে, এই গবেষণার অনুপ্রেরণা তিনি তাঁর বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন, যিনি একজন ডায়াববিটিক পেশেন্ট, এবং তিনি গত 15 বছর ধরে প্রতিদিন তিন বা চারটি করে ইনসুলিন ইনজেকশনের ডোজ নেন।
ওষুধ তৈরির কাজটি এখনও মানুষের উপর পরীক্ষার পর্যায়ে পৌঁছয়নি, তাই কবে এই ওষুধ বাজারে আসবে সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ডক্টর প্রতাপ সিং বলেছেন, যদি সফলভাবে সব জায়গায় এই ওষুধ ছড়িয়ে দেওয়া যায় তৈরি হওয়ার পর তাহলে এই ইনসুলিন ট্যাবলেটটি অনেক বেশি ভালো, সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হবে।
এই বিশেষ ট্যাবলেটটি অন্যান্য ট্যাবলেটের মতো গিলতে হবে না বরং এটিকে দ্রবীভূত করার জন্য মুখের মধ্যে রেখে দিতে হবে। তারপর সেটা মুখের মধ্যে থাকা পাতলা মেমব্রেন দিয়ে সঠিক জায়গায় দ্রবীভূত করে পৌঁছে দেবে। এবং এই উপায়ে কোনও ইনসুলিন নষ্ট হওয়া ছাড়াই সমস্ত ইনসুলিনকে লিভারে পৌঁছে দেবে, এমনটাই ইউবিসির গবেষণা দাবি করছে।
ডাঃ প্রতাপ সিং আশা করছেন যে তাঁদের এই আবিষ্কার প্রতি ডোজ ইনসুলিনের খরচ কমাতে সক্ষম।